স্বপ্নের বড় মাছ যখন নোঙর-বড়শি ভেঙে পালালো
গিন্নি দাবী করতেই পারে ফিসারিজ অফিস থেকে মাছ আনার।
ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে আমি এক রাস্তায় রওয়ানা দিলাম,
গিন্নি অন্য পথ ধরল,
কথা হলো, ফিসারিজ অফিসে দেখা হবে।

কিছুটা এগুতেই দেখলাম, মস্ত একটা মটর গাড়ী
সরু রাস্তা দিয়ে প্রধান সড়কে আসতে গিয়ে আটকা পড়েছে।
প্রশস্ত রাস্তা থাকতে সরু রাস্তায় কেন?
দর্শকের ভীড় থেকে উত্তর এলো,
উনারা বিশিষ্ট, বিখ্যাত ব্যক্তি -
তাই সবাই যে রাস্তায় যায়
সেই রাস্তায় গেলে উনাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়।

আর একটু এগুলাম
কার যেন ভয়ংকর চিতকার ও আস্ফালন শুনলাম,
কে যেন বলল, ভোটের ক্যান্ভাস চলছে।
প্রথমে ভয় পেলেও মুখটার দিকে তাকালাম,
মনে হলো, কলেজ জীবনের চেনা
নাম ধরে ডাকলাম,
ও আমাকে চিনলো না।

আর একটু এগিয়ে এক পথিককে জিজ্ঞেস করলাম,
ফিসারিজ অফিসটাই কিভাবে যাওয়া যায়?
হাত ইশারায় দেখালো,
এখান থেকে বায়ে ঘুরে একটু এগুলেই অফিসটা।

বায়ে ঘুরে দেখলাম,
একটা বারান্দায় এক সুন্দরী তরুনী অধ্যয়নরত।
জিজ্ঞেস করলাম,
ফিসারিজ অফিসটাই কিভাবে যাওয়া যায়?
সুন্দর হেসে বলল, কোন ভাবেই না,
তুমি তো আগেও এসেছো,
ঠিক যেমন কোনবারই যেতে পারোনি।

তবুও এগুলাম
দু'পা যেতেই অর্ধ পদক্ষেপ পরেই পৃথিবীর প্রান্ত;
অতল গহবরে পড়ে চির নিস্প্রাণ হতে পারতাম!
খুব কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম, একটুর জন্যে বেঁচে গেছি,
তবু বুকে ভেতর ধপ ধপানিটা কিছুতেই যায় না।
আর একবার সাহস করে নিচে তাকাতেই দেখলাম,
খুব খুব নিচে রূপালী মেঘের আকাশ,
মাঝখান দিয়ে জলের স্রোতটা না বইলে
সাথের ছোট ছেলেটাও বলতে পারতো না যে ওটা বরফ জমাট সমুদ্র?

হঠাৎ বাড়িটা থেকে মধ্যবয়সী এক সুন্দরীর ডাক শুনলাম,
চলো ছাদের উপর যাই, অনেক কিছু দেখতে পাবে।
সাথে তরুনীটিকেও দেখলাম,
হয়তো উনার বড় মেয়ে,
ছোট একটা সুন্দর মেয়েও দেখলাম,
হয়তো ছোট মেয়ে।
কার আকর্ষণে জানি না, আমি পা বাড়ালাম,
ভুলে গেলাম, সাথে আমার ছোট ছেলেকে।
  
স্বপ্নের যে গন্তব্য পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও খুঁজে পায়নি
সে কি ওই ছাদের উপর?