খাঁচার পাখি শুধায় বনের পাখিরে,
সত্যি করে বল দেখি স্বাধীনতা কিরে?


বনের পাখি বলে, আদরে প্রদত্ত অঢেল খাদ্য ও জল
কিছু খাও, বাকিটা ছিটাও - এই তো স্বাধীনতার সুফল -
ঠিক যেমন তোমার পায়ে যায় গড়াগড়ি।


খাঁচার পাখি বলে, এমন স্বাধীনতার গলায় দড়ি
প্রতিদিন বারেবারে
মুক্তির কান্নায় ডানা ঝাপটায় খাঁচার দ্বারে
ঝরে পড়ে রক্তাক্ত দেহ থেকে এক একটি পালক
আমিই নই আমার এ জীবনের চালক,
তাই চাই অবারিত উড়ে চলা উন্মুক্ত আকাশে।


বনের পাখি বক্র হাসি হাসেঃ
যা দেখো উন্মুক্ত তোমার খাঁচা হতে
চাতুর্যের কন্টক ভরা সেই পথে পথে।
সারাক্ষণ প্রানান্ত ছুটে চলা সেথা ক্ষুধা-তৃষ্ণায়
দিনান্তে তোমার অর্জন লুন্ঠিত হয় শক্তিধরের রসনায়।
হিংস্র চিল, শকুন, সিংহ, হায়েনা, শার্দুল
ওঁৎ পেতে পদে পদে, ক্ষুদ্র ভুলে প্রানাবসান হয় নির্ভুল।


খাঁচার পাখি বলে, সে দারুন অপরাধ
মুক্ত করো মোরে, আজ থেকে দোঁহে তার করি প্রতিবাদ।


বনের পাখি বলে, সে অক্ষমণীয় দুঃসাহস প্রচন্ড
প্রতিদিন বিদ্রোহী প্রতিবাদী এখানে পায় মৃত্যুদণ্ড -
এখানে জীবন বাঁচে শক্তিধর তস্করের উচ্ছিষ্ঠে
যারা বিক্রি করে স্বাধীনতা তাদের পদলেহী-শিষ্টে
বিনিময়ে দখলি স্বাধীনতায় যারা করে ভক্ষণ
তাদের চেয়ে দুর্বলের মুখের গ্রাস, আর তাদের জীবন।