জানি, আর একবার হবে না আসা
আজ তাই দিয়ে যাই উজাড় করে এ বুকের ভালোবাসা।
দিয়ে যায় আদিগন্ত আকাশের অসীম নীলিমায়
বুকে তার বর্ষার বিরহী-মেঘেদের কালান্তের কান্নায়।
অবারিত মাঠের ফসলী-বুকে রঙিন কাথায়
জাদুকরী সমীরণে নেচে যাওয়া ফুলেদের গাছের মাথায়।
বহমান নদীর স্রোতে তীরে তীরে ছুঁয়ে যাওয়া জীবনে
দিয়ে যায় অসীম প্রেমে-তৃষ্ণার্ত, চির-বিরহী সমুদ্রের গর্জনে।
শরতের শুভ্র কাশবনে হারানো অনামিকার সোনালী স্বপনে
হেমন্তে নবান্নের সৌরভ-লোভী কৃষকের ফসল বপনে।
হরষিত কৃষাণির অবগুণ্ঠিত ভীরুতায়
উজাড় হোক এ বুকের ভালোবাসা জীবনের নিবিড়তায়।


জমে জমে নাপাওয়ার খেদগুলি গড়ে যদি পাহাড়
কান্নার বেদনায় ঝর্ণাধারা নামে বহুবার,
নেচে যাবে তার প্রতি জলকণায় সোনালী সূর্যের আলো
জীবনের অভিষেকে আলোর মিছিল হবে জমকালো।
শীত শেষে বিবর্ণ পাতা সব ঝরবেই
বাসন্তী ফুল-পাতায় গাছের শূন্য ডাল ভরবেই।
জৈষ্ঠের দহন শেষে সবুজ ফসলী মাঠ হাসবেই
বারবার পরাজয় শেষে বিজয় তো আসবেই।
পাখি আর মৌমাছি গানে গানে অনাদিকাল তোমার কথা বলবেই
খেটে খাওয়া মানুষদের জীবনের সংগ্রাম চলবেই।


হে আমার বাংলাদেশ! জানি, তুমি রাখবে না কোনদিন মনে
এ পথিক সবকিছুর সাথী ছিল তোমার বুকে কোন এক ক্ষণে।
যা-কিছু দিয়েছিলে তাকে অমূল্য-অগাধ
পরিশোধের যোগ্য নয় সে, যত থাক সাধ।
জেনো শুধু, সবার অজান্তে সে রেখে গেছে শেষ যাওয়ার আগে
তার বুকের সমস্ত ভালোবাসা তোমার অনুরাগে।