বাজারের সবচেয়ে দামী গাড়ি।
তোমার ড্রাইভার আর তুমি।
ভাইরাসের ভয়ে ভয়ে কাপে তোমার বুক,
হাতে গ্লোভস, মুখে বাজারের সবচেয়ে দামী মাস্ক।
ভয়ে গাড়ির দরজা ছুঁয়ে দেখনি গত পাচ মাসে।
গাড়ি থামে।
তুমি চোখ পেতে রাখো অপেক্ষায়।
ড্রাইভার হাতলটা টেনে নেয় তার বুকের কাছে,
তুমি হনহন করে নেমে পড়।
জীবাণুনাশকের কড়া গন্ধে তোমার অফিস,
যেন আজ পৃথিবীর দামী হাসপাতালের ঝকঝকে,
অপারেশন থিয়েটারের মতো।
ক্যান্টনমেন্টের কড়া নিয়মের ছকে ,
তোমার রুমে আসা যায়।
দু চারটি ফাইলে সহি স্বাক্ষর।
থেকে থেকে ক্যামেরায় পোজ।
তুমি যে অনেক কাজের লোক,
মিডিয়ায় আসছে।
মানুষ দেখছে।
পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী মানুষ  তুমি,
যাকে আজও ভাইরাস ছুতে পারেনি।
তোমার অফিসের রঙ্গিন কাঁচ খুলে,
রাস্তায় তাকাও।
ভ্যান গাড়ি, রিক্সা, বাস, আর অটোতে গজগজ মানুষ,
পেটের ক্ষুধার জন্য তীব্র  ভীড় মাড়িয়ে ছুটছে,
লক্ষ জোড়া পা।
তাদের তোমার মতো গাড়ি নেই।
ড্রাইভার নেই।
অপারেশন থিয়েটারের মতো অফিস নেই।
শুধু তুমি বেঁচে বেঁচে আছো?
তারা কেউ বেঁচে নেই?
জানালা বন্ধ করলে কেন?
তুমি তো শক্তিশালী মানুষ।
যাও বাজারের ভীড় মাড়িয়ে এক কেজি ছোট মাছ,
দামাদামি করে কিনে নিয়ে আসো,
ফুটপাতে দাঁড়িয়ে একটা লাল চা আদা দিয়ে খাও,
গাদাগাদি করে বাসে উঠে সারা শহর চষিয়ে,
ঘেমে ঘেমে তোমার অফিসে সব চেয়ে,
কম বেতনের মানুষ টার মতো রোজ রোজ বাড়ি ফিরে আসো।
দোকানীর ঘাড়ের ওপর গরম নিঃশ্বাস ফেলে,
সিগারেট ফুকে ফুকে ধোঁয়াসা কর পৃথিবীর মুখ।
পারবে?  পারবে?
ভয় কর কেন?
তাহলে তুমি জানবে তুমি তাদের মতো বেঁচে আছো।
তারাও  বেঁচে আছে, তুমি ও বেঁচে আছো।