পাশের সারিতে


লতিফুর রহমান




পাশাপাশি দুটো লাইন। সে নারী আর আমি  পুরুষ সারিতে।
দুনিয়ার সবচেয়ে বড় অপেক্ষার এই সারি বদ্ধতা,
কেঁচোর মতো অগ্রসর গতি,
সেই গতিতে আমার সারির আর পাশের তার সারির দু ইঞ্চি করে এগুনো ধাপ।
এই অন্তহীন অপেক্ষা তার আর আমার,
শুধু তাই নয় এই অপেক্ষা সকলের।
গুনে গুনে রাখি এখন আছি সিরিয়াল দশ, তাকে গুনে দেখি আট,
কিছুক্ষণ পর পর তার লম্বা নখের ব্যস্ত সময় মোবাইলের,
স্ক্রিনে চালাচালি, ব্যস্ততা।
থেকে থেকে মিতব্যয়ী  মুচকি হাসি,
শুস্ক ঠোঁটে দু'বার তার লিপ-জল মাখানো লিপস্টিক,
তাকাতাকি এদিক ওদিক,
দুটো খোরাসান চোখ,
ঠিকঠাক আমার গিরিবাজ নারী কবুতরের চোখের মতো,
ব্যস্ত, সতর্ক, ক্লান্তিহীন চাহনি।
ঘাড় ছুটছই নিখুঁত ঘন কালো চুল, সুঠাম শুভ্র হাত পেরিয়ে,
লিখ লিক নখের চারায় কফির রং মাখানো নখ পলিশ।
তার ক্লান্ত পায়ে মাঝে মাঝে বকের মতো,
ক সেকেন্ড একপায়ে  দাঁড়িয়ে থাকা।
আমার দৃষ্টির বাহিরে তার যাওয়ার নিস্তার কই,
প্রতিটি সেকেন্ড আমি,
শুষে নিচ্ছি তার সমস্ত রুপ, সৌন্দর্য, আর তাকে,
যেন একশো বছর তাকে আর  না দেখে কাটিয়ে দিতে পারি।
সে ক ধাপ এগিয়ে এখন, আমি এখন চার সে দুই,
হাত ব্যবধান সে আর আমি।
তার শরীর বেয়ে উপচানো, বিমোহিত করা,
মাতালি সুগন্ধি সব মিশে যায় বাতাসে।
দুটো সারি মিলেছে এখানে একই বিন্দুতে,
আমি ভুলে গেছি সেই কবে, অপেক্ষায় আমি।
তার সিরিয়াল এলো,
এরপর, সে চলে গেল।
আমার মেরুদন্ডে কনকন ব্যথা, দেখি আমার দু পা,
বড্ড ক্লান্ত হয়ে আছে,
আমি ভুলে গিয়েছিলাম,
অপেক্ষায় ছিলাম কখনো।