সুনীল তোমার নীরার অসুখ হলে নাকি,
কোলকাতার সবাই বড় দুঃখে থাকে।
আমার নীরা ও বেশ অসুস্থ ইদানীং,
একদিন দেখি সারা বাংলার মানুষের মুখ বিমর্ষ,
স্তিমিত চন্দ্রের আলো, সূর্য উঠেনি সারাদিন,
পাখিগুলো কেন জানি পাখনা মেলে মাতালের মতন উড়ছে,
গাছের বাকল চুয়ে চুয়ে ঝরছে চোখের জল,
একটা হরিণের শাবক কেদে কেদে  এসে বল্লব,
নীরার অসুখ।
১৬ কোটি মানুষের মুখে মুখে তখন নীরার অসুখের খবর।
আমি তারপর জেনেছি সবার শেষে।
নীরার অসুখের খবরে আমি বেসামাল, উদ বাস্ত,
আমি ভয় পেয়ে যাই, অলক্ষ্মী কল্পনায় নীরাকে দেখি,
চোখের সামনে তখন নীরার শুস্ক, খুস্ক মুখ।
নীরার কাছে জানতে চাই,
নীরা কেমন আছ?
নীরার সেই ছক-বাধা উত্তর,
ভে-বনা। আমি ভালো আছি।
তার অসুখে আমার ভিতর শুস্ক, ঝরঝরে বালুচর।
আমার দুশ্চিন্তার ভয়ে কখনো কখনো গোপন করে নীরা।
বুকে  জমিয়ে রাখে অসুখ,
এলোমেলো কথা বলে, আমার সন্দেহের তীর ছুড়ি তার বুকে,
তখন বলি, নীরা তোমার মুখ দেখব।
নীরা অবগুণ্ঠিত করে তার মুখ।
আমি দেখতেই চমকে উঠি,
একি, কেন বলনি? আমার প্রস্নবানে সে রঞ্জিত।
নিত্য ঔষধে তার অরুচি, ইচ্ছে কৃত তার অনিয়ম,
জীবনের উপর কখনো কখনো তার বিতৃষ্ণা,
আমাকে বলে, আমি বুঝি আর বাঁচাবো না।
টপটপ করে তার চোখ থেকে জল ঝরে।
আমি আপ্লুত হয়ে যাই,
সে বড্ড ভাবায় আমাকে।
আমার ব্যাকুলতা নীরা জানে, কতটা ভালোবাসি নীরা জানে,
তার জন্য আমি কতটা আকুল নীরা জানে।
সুনীল তার নীরার অসুখে দুঃখ পায়,
সেই নীরার মতো আমার নীরার অসুখে,
আমি ঘুম হারাই চোখে।
(চলবে)