রাজা ছাড়িয়া দীর্ঘশ্বাস, অবশেষ তবে বসিল তখতে,
মধুরাক্ষীর গুঞ্জরিছে ভাসিল সবার মুখেতে।
যুবককে শৃংখল বেধে কোতল, সম্মুখে করিল দন্ডায়মান,
রাজদণ্ড শুনিতে ব্যাকুল, উপস্থিত প্রজাগন।
দু হাত উঁচিয়ে যুবকের মাতা করিছে আহাজারি,
সন্তান তাহার ভুলের বেশে, রাজা দাও মুক্ত করি।
রাজা তখনও তখতে বসিয়া সর্পের রূপ ধরি,
যুবকের দিকে চাহিয়া রহিছে যেন দংশনে মারি।
অন্দরমহলে রানী আর রাজকুমারী ফুলে ফুলে কাদছে,
আশংকা তবু ছাড়ছে না পিছু রাজদণ্ড কি যুবকের প্রাণ লইছে?
কাজীর হস্তে একফালি কাগজ, দন্ডায়মান যুবকের মুখোমুখি,
কহিল যুবকের আছে কিছু বলার বাকী?
শুনিয়া যুবক অট্টহাসি রাখিল না আর রাখিল না গোপনে,
কি অপরাধ মোর? না জানিয়া দণ্ডাদেশ মানিব কেমনে?
অপরাধ যদি মোর হয়ে থাকে, তাহা মানিয়া লইব নতশীরে,
সকলেই জানুক আগে, শাস্তি তবে। অপরাধ কেন রহিবে অগোচরে?
যুবকের কথা শুনিয়া প্রজাগন করিল শোরগোল, হক কথা বটে,
সেনাপতি উঁচিয়ে অজি, বাঘের গর্জন সম তাহারই ঠোঁটে।
চুপ কর বেয়াদব, প্রজাদের কহিল রাজার সম্মুখে এত শোর!
যুবক কহিল, অজি দেখাইয়া প্রজা দমন, এ রাস্ট্র তোদের?
সেনাপতি তেড়ে আসিয়া যুবকের পানে অগ্নিবর্ষণ চাহিল,
রাজার অংগুলী হেলনে, সেনাপতি শান্ত হইয়া বসিল।


(চলবে)