প্রিয়তি
কথা রেখেছোতো?
সেই দিনের কথা, সেই সময়ের কথা?
আষাঢ় -শ্রাবণ, রজব-শাবান,
জুন-জুলাই, সেকেন্ড-ঘন্টা, সপ্তাহ-মাস
কত নামেই না কত সময় বয়ে গেলো
জানালার কাঁচটা পুরোনো হতে হতে ভেঙে কয়েক টুকরো হয়ে গেছে।
শিমুলের ডালে ডালে কত শীত-বসন্ত এলো গেলো!
শুধু কথা কথার  কথাই রয়ে গেলো।
কথা দেওয়া কি সহজ তাই না?
সবাই খুব সস্তায় কথা দিয়ে দেয়
তাতে কোন যত্নের প্রয়োজন হয়না।
অনেক মুকুল অনেক আমের কথা দেয়
দেশের রাজাও অনেক কথা দেয়
বর্ষা বাণে ক্ষুরো স্রোতে কত স্বপ্ন কথাইনা ভেসে আসে!
কাল বৈশাখের ঝড়ে, রাজ পথের দাবীতে, আর স্রোতের ভাঙনে ঝরে যায় সেই সব আমের কথা,
সেই রাজাদের কথা, আর সেই স্বপ্ন কথাগুলো!
এসব নিয়ে কে ভাবে বলো?
কে কতো কথা দেয় তার সবটা কি মনে রাখার মতো?
অনেক সস্তা কথার ভীরে অনেক কথাই হারিয়ে যায়।
কিন্তু কি আশ্চর্য দেখো!
সেই সস্তা কথাগুলো আমার এখনো মনে আছে!
সন্ধ্যা রাতের আঁধার কিংবা ঝড়ো বৃষ্টির বজ্রপাতের তুমুল ঝড়ের ভীড়েও আমি কেন ভুলতে পারিনা সেই কথা, তাকি বলতে পারো?
কি যে ভুলো মন আমার, তবুও ভুলে যাইনা সেই কথা নামের প্রতিশ্রুতি।


কোন এক দুঃখ দিনে ছায়া যুদ্ধে পরাজিত হই বার বার
ভোরের কুয়াশা বেয়ে নেমে আসে অ-অনুমিত ঠিকানায় ভবঘুরে পায়চারি
সেখানে আমি আমাকে আর খুঁজে পাইনা
তপ্ত দহনে ছাই হয়ে কোথায় যেন মিলিয়ে যাই
খুব একা হয়ে!
আজো বৈশাখী ভীর হয়, রাজপথে মিছিল হয় ভীষণ,  ভীষণ ব্যস্ততা আজো বড্ড ব্যস্ত রাখে জীবনকে, জীবনের আয়োজনে অনেক কথাই বলতে হয় প্রতিদিন।
তবুও কথা দিতে খুব, খুব ভয় হয়
রক্ত দাগের আলপনার মতো, সাদা আকাশে মেঘের ভাজের মতো, কুণ্ডলী আগুনের ধুপের মত যে ধোয়া উড়ে তা কেবল সেই দেওয়া কথার শ্বাস যন্ত্রণা।

প্রিয়তি, তোমাকে বলি
সময় একদিন নিঃস্ব করবেই আমাকে, তোমাকে আমাদের সবাইকে, মিহি দানার মত পথের ধুলোর অস্থিতের চেয়েও এই আমরা খুব ক্ষণজন্মা!
তবুও আমাদের যতটুকু সময়
বেঁচে থাকার এই আয়োজন, বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখায় যে দূর মায়ার মেঘ তা কেবলি সেই কিছু কথার স্বপ্ন গুলি।
সময় শেষ হয়, বিদায়ের আয়োজনে বাড়ে ব্যস্ততা, জীবন আর মরণ থেকে হারিয়ে যায় প্রিয়তির নাম গুলো, মুছে যাওয়া চিহ্নের আলপনায় খুব, খুব ঝাপসা হয়ে ভেসে উঠে সেই কথার যন্ত্রণা......
"এতটা স্বপ্ন কাউকে দেখাতে নেই
সস্তা কথার অযত্ন অবহেলায়!"
যে দুঃখ তুমি বইতে পারবেনা
সে যন্ত্রণা অন্যেকে দেওয়ায় সুখ নেই, সুখ থাকেনা, থাকতে পারেনা..