আমি তাকে আসতে বলি না,
তার জন্য অপেক্ষা বা
উদ্বেগও থাকে না,
তবু ইতস্তত,নম্র,মৃদুপায়ে
আসে প্রতিদিন,কত স্বার্থহীন
দাঁড়ায় আমার আঙিনায়
আমি তার উপস্থিতি টের পাই
মনের অজান্তে কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসি,
সেই শৈশব থেকে,হে সূর্যালোক !
তুমি কত নিঃস্বার্থ ভাবে আসো প্রতিটি ভোরে।
আগুনে তাপানো এক পেরেকের উপর
অসতর্ক আমি পড়েছিলাম হুমড়ি খেয়েই
গনগনে সে পেরেক বিধে গিয়েছিল আমার বুকে।
সেদিন থেকে ধবধবে,নরম বিছানাকে মনেহয় কাঁটাময়।
টেবিলে কমলার রস,আপেল-নাসপাতির ছড়াছড়ি,
তবু মনে হয় কি অখাদ্য খেয়ে ভরপেট হয়ে
সারাদিন ক্ষুধা, পিপাসাহীন আমি।
পুরনো এ্যালবাম ঘেটে পাঠিয়েছিস তুই
শৈশবের সাদাকালো কত শত ছবি,
যেখানে তোর আঙ্গুল ধরে দাঁড়িয়ে আমি
স্বপ্নময় চোখ আর ফোলা ফোলা গালের
নিষ্পাপ এক দুরন্ত কিশোরী।
সে ছবি নিয়ে যায়, কোথায় যেন হারানো কোনদিনে।
তখনই তীব্র  জ্বলুনি ওঠে বুকের জ্বলন্ত পেরেকের,
আমার ভিতর প্রতিবাদ করে ঘৃণা আর উত্তেজনায়
সুসজ্জ্বিত ঘরবাড়ি,সাজানো বাগান,সভামন্চে করতালি
জয়ধ্বনি, পূষ্পার্ঘ মিথ্যা হয়ে যায়।
চোখের তারায় আগুন জ্বলে
চমকে উঠি,পুজার ফুলেও দেখি পাপ।
বুকের ভিতর তীব্র জ্বলুনি জ্বলন্ত পেরেকের!
নিজেকে বড়বেশি নিঃসঙ্গ মনে হয়,
ফুল পাখি নক্ষত্ররা বুঝি ঠিক জায়গায় নেই!
মনে হয় জানালার ওপারেই তো মৃত্যু
তবে কেন জ্বলছি দাউ দাউ
উদ্বেগ,আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা
তার চারপাশে সন্তানদের মুখ।
সাদাকালো কৈশোর আর সন্তানদের মুখ,
আবারও  বাঁচার সাধ হয়।
মলিব ছবির সেই রঙীন কিশোরকে বলি
আয় না আর একবার স্বপ্ন দেখা যাক্!
পুরনো আকাশে জেগেছে নতুব চাঁদ
হাতে যদি থাকে তোর অনেক কাজ,সেরে আয়,
বেশিদূর যাবো না,পাঁচিলের ওপারেই তো
আমাদের চিরচেনা সেই সোনালী শহর!!