শয়তান (প্রথম পর্ব)


গতরে রয়েছে মোর মাতঙ্গের বল,
সমগ্র পৃথিবী টা কে করিব দখল!
সুমিষ্ট বচন ভঙ্গি মনে পুষি কাক,
শুনতে পায়না কেহ অন্তরের ডাক।
মন্দ কথা ঢুকে সদা কর্ণের কুহরে,
বিতরণ করি ঘৃণা মন তাতে ভরে।
রক্ত নদে সাতরিয়ে পাই মনে সুখ,
হাসিমুখ দেখলেই যায় বেড়ে দুখ!
দেহমন ছাই করা নিত্যকার কাজ,
তবুও পরায় সবে বাধ্য হয়ে তাজ!
কুরেকুরে খেয়ে নেই সবাকার মন,
হরণ করিয়া আনি অন্য হতে ধন।
মত্ত হয়ে দলবেঁধে কুড়াই আনন্দ,
করি কামনা সর্বদা অপরের মন্দ।
ঝুটা ভাষণ শুনিয়ে মন করি জয়,
বাঘ-সিংহ নই তবু;করে সবে ভয়!
স্বার্থবাদী স্বইচ্ছায় করে পা লেহন, 
নিজেকে মহান ভাবি হরষে তখন। 
করে সবাই সম্মান;নই কিন্তু দস্যু!
নেংটা চলি স্বইচ্ছায়;ভেতরটা শিশু।
(চলবে)


শয়তান (দ্বিতীয় পর্ব)


বিষাক্ত অন্তর মোর;তীক্ষ বিষ দাত,
দুষ্টদের সর্ব কার্যে;থাকে মোর হাত।
ঘরের বাহিরে পাই অনেক সম্মান!
জয়ধ্বনি দিয়ে সবে গেয়ে নেয় গান।
স্বার্থের তরণী চড়ে কাঁধে মোরে রাখে,
হাসি পায় নিজেরই মুখগুলো দেখে!
পবিত্র ফুলের মত সবে মোরে বলে,
অন্তরের সুখ মোর নেশা মিশ্র জলে।
গরু-মোষ-ছাগ নই;শ্রেষ্ঠ জীব আমি!
নিজেকে বিক্রয় করে;সবচেয়ে দামি!
দেহ চড়ে করি খেলা রক্তের উপরে,
নাহি মানলে বশ্যতা পাঠাই কবরে!
মুহুর্তে বদল করি স্বার্থে গড়া দল,
যাই চলে স্ব-ইচ্ছায় পাই যেথা বল।
শিষ্যদের বিনামূল্যে দেই অপশিক্ষা
ওঁদের অক্লান্ত শ্রমে সততার অক্কা।
নীতি হীন রাজনীতি করে পাই সুখ,
সবাকার হাতে তুলে দেই সদা দুখ। 
কর্ণে দেই নীতিবাক্য করিনা পালন,
খেয়ে ফল কুকর্মের ভরে মোর মন।
(চলবে)


শয়তান (তৃতীয় পর্ব)


বাহুবল দিয়ে করি সহস্র অন্যায়,
হজম করিয়ে দেয় অজস্র উপায়।
ব্যবসায় করি আমি সত্বর উন্নতি,
পকেট লুণ্ঠন করে হই কোটিপতি।
গনতন্ত্র হত্যা করে;সৈরতন্ত্রে চলি!
জনতার মতামত দু কদমে দলি।
ঘুষের টাকায় গড়ি বহুতল বাড়ি,
বস্ত্রের মতন করে বদলাই গাড়ি।
মন্দের মস্তক চড়ে কুড়াই আনন্দ,
নীতিবানদের নেত্র দেই করে অন্ধ!
সুখ পাই রক্ত চুষে;নই তবে জোঁক!
রয়েছে দেহে মোর ঘ্রাণেন্দ্রিয়-মুখ।
হরষিত মনে করি প্রকাশ্যে ধর্ষণ,
দর্পণে উলঙ্গ দৃশ্য;করে আকর্ষণ।
উগ্র পথে স্বজনকে করে দেই খুন,
পান করি নয়নাশ্রু স্বাদ পাই নোন।
প্রাণযুক্ত শরীরটা করে দেই ছাই!
দেহমন করায়ত্তে যদি নাহি পাই।
মাতৃদেহ-পিতৃদেহ;বৃদ্ধাশ্রমে রাখি,
ভাজহীন দেহগুলো দুনয়নে আঁকি।
(চলবে)