সর্পের ফণী
প্রশান্ত মিত্র (শান্তা)
শৈশব হতে আসিতেছি শুনে,
আমার-আমার ধ্বনি,
মায়া জালে নিজেও বন্দী,
শব্দটি যে সর্পের ফণী।
দাদু বলিত আমার বাড়ি..
............আমার মতো,
শব্দটি এতই বলিত!
উঠিতে বসিতে অবিরত।
দাদুর চেয়েও বহু গুণ বেশি
বলিত আমার দাদি,
দু'জনই শায়িত কবরে এখন,
তাদের জন্য কাঁদি!
একই শব্দ বার-বার শুনেছি
মাতা-পিতার মুখে,
লালিত পালিত ছিলো শব্দটি
তাহাদেরও বুকে।
জনক- জননী চির নিদ্রিত,
মিশে আছেন মাটিতে,
তাদের জন্য কাঁদি সদা!
উঠিতে-বসিতে-হাটিতে।
এখন ছেলে বলে,আমার বাবা!
অন্য কারোর না!
কেহ যদি বলে আমার,তাহার
চোখে-মুখে কান্না!
ভাবনায় ফেলা শব্দিটি হয়েছে
কণ্ঠে মুক্তার হার,
আমার! আমি কার? শব্দটির
কেন এতো বাহার?
মাটির দিকে তাকিয়ে দেখি
কেহ কারোর না,
শব্দটি অহংকারে পরিপূর্ণ,
মিথ্যে ষোলো আনা!
আমার-আমার বলে সবাই
শূণ্য হাতে চলে যায়,
একবারও বলে না, তবুও
মাটি সবকিছু গিলে খায়!
মাটিরই আছে শব্দটি বলিবার
একমাত্র অধিকার,
সবকিছু নিজের করে নেয়,
তবুও নেই অহংকার।
বেঁচে আছে দম্ভ,ছলনার মোড়কে
অনন্ত কাল ধরে,
কখনো মরে না!যত্নে বেঁচে থাকে
প্রতিটি অন্তরে।
০৭/১০/২০২১