বই আর নারীর প্রেম
    তোমায় না দেখলে হয়তো বোঝা হতো না
    দেখা হতো না স্নিগ্ধতার ঝালর
    জানা হতো না বইরসে এতো আস্বাদন।
পাঠাগারে বইয়ে গোলাপ
কবিতায় হাজার প্রলাপ
উক্তিতে বাণীতে সমুদ্র স্নিগ্ধতা খুঁজেছি।
বই হতে বই, পৃষ্ঠা হতে পৃষ্ঠা
  তারপর-
তারপর হঠাৎ একদিন,
কালো বোরখার ভিড়ে তোমার একজোড়া চোখ সৃষ্টি
    দুটি হাতের কোমলতার দর্শন;
দশটি নখে মেহেদী রং এর ভাষণ-মিছিলের আবিষ্কার।


সুকান্ত নজরুল রবিঠাকুর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই নিয়ে পাঠাগারের তৃতীয় সারির শেষ টেবিলে
                 তুমি মহাকাব্যের অবস্থান।
তুমি এতোদিন
    চর্যাপদের মতো অনাবিষ্কৃত ছিলে
    শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের মতো আড়াল হয়ে ছিলে।


ভোর শিশিরের আলতো ঝিলিকের মতো তোমার চাহনিতে বইগুলো আমার কাছে
    আরো জীবন্ত হয়ে উঠল
    ইতিহাসে টগবগিয়ে রক্ত নামল
    কবিতায় নতুন প্রেম উঠল
    প্রহসনে বিদ্রুপতা সাড়া তুলল
    মহাকাব্যে বসে কবি আবার হাতছানি দিল
    ভ্রমণ গ্রন্থে যাযাবরের পৃথিবী জয় করা শেষ।


অবশেষে তুমি মহাকাব্যপানে
লুকিয়ে লুকিয়ে চাতক টানে
নির্বিশেষে কালি-কলম সাজি,
    ভাবনায় সিন্ধুমাঝি
একটি বর্ণও পড়া হয়না শেষ
   শেষ হয়না ডুবসাঁতার
অকূল পাথার তুমি মহাকাব্য
                 প্রতিদিন কালো বোরখার মলাটে।
হঠাৎ কখনো দুজনের মিলে চোখে চোখ
মনে হয় তুমি মৃদু হেসে দিয়ে বলো,
    এই যে মহাশয়, এতো তাকাও কেনো?
    বই যে পড়তে আসো আদৌ পড়া হয় তো?
    কিংবা তুমি আমায় নিয়ে যে কবিতা উপমা লিখার চেষ্টা করছো তার অগ্রগতি কতদূর?


তুমি প্রতিদিন পাঠাগারের তৃতীয় সারির শেষ টেবিলে
আর আমি  
    তুমি বরাবর দক্ষিণ-পশ্চিমকোণ।


২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯


(কাব্যগ্রন্থ- সম্ভাষণ)


কাব্যগ্রন্থ পরিচিতিঃ
("সম্ভাষণ" কাব্যগ্রন্থটির বেশিরভাগ কবিতা সংলাপনির্ভর, কখনো প্রেমিক-প্রেমিকার, কখনো সন্তানের সাথে পিতামাতার, কখনো অচেনা কারো সাথে)