(সম্মানিত কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা “এই দৃশ্য” অনুসরণে)


হাঁটুর ওপরে থুতনি, নীলাবতী বসে আছো তুমি
ইচ্ছে তোমায় ভাস্কর্য বানিয়ে রাখি তেপান্তরের বুকে
এই খোলা ইচ্ছের সন্ধ্যারাগে সাত সমুদ্র কোলাহল,
দ্বন্দ্ব লাগায় মনে। অপলক চেয়ে থাকার অসুখে-
আমার ইচ্ছে বাসনায় চলে সম্মোহনের স্নায়ুযুদ্ধ;
বুঝি এই মনোরমা দৃশ্য তৈলচিত্রে এঁকে রাখি
স্মৃতিপটের জাদুঘরে সযত্নে করে রাখি অবরুদ্ধ।
হাঁটুর ওপরে থুতনি, নীলাবতী বসে আছো তুমি।


হাঁটুর ওপরে থুতনি, পায়ের আঙুলে লাল আভা
এই অপরূপ দৃশ্য দেই বুঝি কবিতায় রূপ
যেথা অক্ষরে অক্ষরে তোমার খোলা চুলের মিছিল
লাইনে লাইনে নীল ডুরে শাড়ির কাঁপন নিশ্চুপ;
স্তবকে স্তবকে তোমার নিরন্তর জয়গান;
সাঁঝ বেলাতে তোমার শাড়ির গন্ধময়ী ধূপ।


হাঁটুর ওপরে থুতনি, নীলাবতী বসে আছো তুমি
চোখ চাহনি বেয়ে, উচ্ছ্বাস চেতন ধেয়ে নগ্নপেট চুমি-
সময় সুধা পেয়ে হোক অমরত্ব, মিথ্যা হোক সত্য
নিত্য এই চিত্র শোভায় জড়িয়ে থাকুক বিশ্ব।
হাঁটুর ওপরে থুতনি রেখে, বসে আছো তুমি
এ যেনো সপ্তপৃথিবী মাতানো, মনোলোভা দৃশ্য।


আমি রংতুলি হাতে, যেনো খেয়ালি বনে তোমায়
ইচ্ছে, ঠাকুররূপে, শেষ বয়সের প্রিয়া করে রাখি;
শাড়ি পরিহিত শত শতাব্দীর মোনালিসা করে
মহাকাল থেকে মহাকাল; তোমাতেই চেয়ে থাকি।
বন্দীফ্রেমে রাখি বুঝি তুমি তোমাকে; সময়ের গতি;
হাঁটুর উপরে থুতনি; আমার ইতিহাস লেখা বাকি।


ইচ্ছে চিত্রপটে তুলে রাখি কলমের দাগের গর্জন
নিঃশ্বাস বকুলে জমিয়ে কিংবা অস্তাচলের শোভায়
হাঁটুর উপরে থুতনি, নীলাবতী বসে আছো তুমি
ইচ্ছে, প্রেম রং মেখে দিকচক্রবালে এঁকে রাখি তোমায়
হাঁটুর উপরে থুতনি, নীলাবতী বসে আছো তুমি।


৬ মে, ২০১৮


(কাব্যগ্রন্থ- সম্ভাষণ)