(একজন চিকিৎসক আর একজন বাথ অধিবাসিনীর পরিচয়)


আমাদের সাথে দলে ছিল এক ওষুধের ডাক্তার ৪১১
জগত জুড়ে তার মতো চিকিৎসক মেলাভার।
জানত যেকোনো ওষুধ কিংবা কাটাছেড়া বিষয়ক
সে জ্যোতিষ শাস্ত্রেও ছিলো ভীষণ পারদর্শক।
জ্যোতীষ শাস্ত্র মতে দিন ক্ষণ কাল মান জেনে
রোগী দেখতো সে সুকৌশলে সুযতনে।
রোগীর জন্য কাজে লাগাতো জ্যোতিবিদ্যার জ্ঞান,
সুচারূপে নির্ণয় করতো রোগের সঠিক অবস্থান
গরম কিংবা ঠান্ডা, শুকনো বা ভেজা উপাদান
সব বিষয়ে ছিলো তার বিশেষ মেধা জ্ঞান।  ৪২০
জানে কেন রোগ বাড়ে, কোন তরলে রোগ বিপদজনক
সে প্রকৃতপক্ষেই ছিলো একজন পাকা চিকিৎসক।
রোগের কারণ আর মূল নির্ণয় হতেই তার জ্ঞান
সরাসরি দিতো সে ওষুধপত্র, রোগ নিরাময়ের বিধান
ওষুধ প্রস্তুতকারীরা সর্বদা সব প্রস্তুত করে রাখে
পথ্য সিরাপ ওষুধপত্র যা যা অসুখে দরকার থাকে।
তারা তাদের পরস্পরের আগে দেখে লাভের বিষয়
কারণ তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তো আজকের নয়।
সে খুব ভালো করে প্রাচীন কালের এসকিউপিয়ুস
ডায়োস্করাইডস এবং বিখ্যাত রুফুস
বৃদ্ধ হিপোক্রেটস, হ্যালি ও গ্যালেন
সিরাপিওন, রাজেস এবং এভিসেন            ৪৩০
এভিরোস, দামাস্কাস এবং কন্সটানটাইনে
বার্ণাড, গয়াডাসডেন এবং গিলবার্টকেও চিনে।
খাদ্য বিলাসিতায় খুবই সে পরিমিত উপভোগ্য
যতটা পুষ্টিকর, সহনশীল ও পরিপাকযোগ্য -
ঠিক ততটাই খেত; এর চেয়ে খাদ্য বেশি নয়
চিকিৎসক বাইবেল পড়ে সময় করত না অপচয়।
তাফতার সাথে রেশম পাড় বসানো নীল লাল
কাপড় পরতো সে, চালাতো তার দিনকাল।   ৪৪০
সে ছিলো মিতব্যয়ী চালাতে তার রোজ রুজি
তাই টিকিয়ে রেখেছিল প্লেগের সময়ের জমানো পুঁজি
জানত ওষুধে বিষয়ে পানীয়ে সোনা খুবই উপকারী
এই জন্য সে বিশেষ করে সোনা ভালোবাসত ভারী।


আমাদের সাথে ছিল বাথের এক ভদ্র অধিবাসিনী  
দুঃখের বিষয় সে ছিল বধির কিন্তু দেখতে সুচারিণী।
কাপড় বুননে অধিক দক্ষ ছিল বাথের সেই নারী
ওয়াইপ্রেস ও গেন্টের তাতীদের চেয়ে দক্ষ ছিল ভারী।
তার মতো কোনো স্ত্রীলোক ছিলো না যাজক অঞ্চলে
যে তার আগে কেউ কখনো ভজনালয়ে চলে। ৪৫০
যদি কেউ কখনো যেত, তবে ভীষণ যেতো রেগে
দয়ামায়া তার হৃদয় থেকে মুছে, ক্রোধ উঠতো জেগে।
ভালো সুতোয় তৈরি ছিলো তার মাথার আবরণী
রবিবারে মাথায় পরতো যে আবরণ, সেই রমণী-
দশ পাউন্ড ওজন তার; আমি হলফ করে বলতে পারি,
লাল রঙের মোজা, তার পায়ে শোভা দিতো ভারী।


বাথবাসিনীর ফিতা এবং জুতা ছিল অভাজ আর নতুন
তার মুখবদোন ছিল সাহসী সুন্দর, রক্তিম সুনিপুণ।
সারাজীবন বাথ অধিবাসিনী ছিলো সবার শ্রদ্ধাভোগী
দিলেও বাদ তার যৌবনকালের অন্যান্য সহযোগী ৪৬০
এখন পর্যন্ত গুণে গুণে তার পাঁচ পাঁচটা ছিলো সোয়ামী;
এসব কথা আজ বলার দরকার নেই; এখানেই থামি।
বাথবাসিনী তিন তিনবার গিয়েছিলো জেরুশালম
অনেক সমুদ্রপথ নির্ভয়ে করেছিলো সে অতিক্রম,
গিয়েছিলো সে রোম এবং গিয়েছিল বলোনিতে
গ্যালিসিয়ার সেন্ট জেমসের তীর্থে আর কলোনিতে।
দেশ ভ্রমণের বিষয়ে অনেক কিছুর রাখে সে হুশ
সত্যি কথা বলতে কি, সে একটু ঠোঁট আলগা মানুষ।
বাথবাসিনী শান্ত ঘোড়ার পিঠে বসে আরামে ছিলো কত,
বিস্তৃত ঝালর কিংবা সুবিশাল ঢালের মতো ৪৭০
মাথায় তার একটি ঘোমটাবিশেষ ছিলো; বেশ চওড়া।
তার কোমর ঘিরে জড়ানো ছিলো বড় এক ঘাঘরা
এবং এক জোড়া ধারালো ঢাকনা গোড়ালিতে ছিল পরে,
কোনো সভায় সহৃদয়ের হাসিঠাট্টা জানে ভালো করে
জানে সে ভালেবাসার সব ধরণের টোটকা প্রতিকার
পুরনো খেলার কৌশল ছিল ভালো করেই রপ্ত তার। ৪৭৬