রজনীর শেষে পূব দিগন্তে ঘোমটা তুলিলো কে !
কাকলি ছন্দে জাগরণী সুর গাহিয়া উঠিল কে !
নব উত্থিত অরুণ আলোকে
হানিয়া আঘাত পাখীর পালকে
স্তব্ধ বনানী চঞ্চলময় করিয়া তুলিল কে !


পূর্বাচল যে রাঙিয়া ঊঠেছে কার সে রক্তরাগে ?
কার ভয়ে ওই আঁধার দৈত্য প্রাণপণ বেগে ভাগে !
কাঁহার আশায় দুখিনী জননী
অপলক চোখে সারাটা রজনী
প্রদীপ জ্বালায়ে মরণাপন্ন ছেলের শিয়রে জাগে !


কার তরে কাঁদে গুল্ম লতিকা মহীরুহ তরুদল ?
কার আশা চেয়ে ভ্রান্ত পথিক ফেলিতেছে আঁখিজল ?
কাঁহার লাগিয়া প্রতীচী আকুল
বিশাল জলধি হইয়া ব্যাকুল
বেলাতটে এনে আছাড়ি ফেলিছে তরঙ্গ হিল্লোল ।


ঝাপটায়ে পাখা বিহগ জাগিল, তুলিল নতুন ছন্দ,
অচেতন হিয়া চঞ্চল ক'রে ঘুচাইল বাধাবন্ধ ।
ঝরঝর ঝরে ঝরনার ধারা
ছুটে চলে হ'য়ে বন্ধনহারা
সবকিছু আজ গতিময়, নহে নিশ্চল নিস্পন্দ ।


কত উজ্জ্বল রূপ তাঁর আর কত উজ্জ্বল অঙ্গ;
স্তোত্র রচিছে সুন্দর সদা, পূজিছে দিগ্-মাতঙ্গ ।
সে যে অপরূপা অরুণাবরণী
আঁধার-বিনাশী দুঃখহরণী
নিতি নিতি দেখি ধন্য তাহার মোহিনী-মূরতি রঙ্গ ।।