৮ ফাল্গুন, বিহানে বিহঙ্গের গুঞ্জন
শিশির সিক্ত স্নিগ্ধ সকাল,
প্রকৃতি তার সবুজ শাড়ীতে
আলপনা এঁকেছে দিয়ে রং লাল।
ফুলেরা ফুটেছে, অলিরা নাচছে,
কোকিল ডাকছে, বসন্ত হাসছে।
কী স্নিগ্ধ, কোমল অপরূপ প্রকৃতি!
বলি আমি অনন্যা, অপরূপা তুমি
তোমার সৌন্দর্যে বিশ্ব দেয় স্বীকৃতি।


প্রভাতকে প্রশ্ন করি-
শিশির ভেজা কেন তুই বল?
কহে সেতো শিশির নয়,
ছেলে হারানো দুঃখিনী মায়ের
গড়িয়ে পড়া নোনা আঁখি জল।


প্রশ্ন করি-
ও কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, পলাশ,
কোথা পেলে এতো লাল?
বলে সেতো উনিশ’৫২ সাল;
প্রকৃতির খাতায় সবুজ পাতায়
লেখা এক রক্তাক্ত ইতিহাস।


সুকণ্ঠী কোকিলকে বলি-
এতো সুমিষ্ট তোমার গান!
শুনে ভরে মন-প্রাণ,
কোথা পেলে এ গান?
বলে বিনিময় সেতো-
ভাইয়ের জীবন বলিদান।


শিমুল পলাশ কৃষ্ণচূড়ার শাখে
শীত আর গ্রীষ্মের এই বাঁকে
ভাই মোর গীত গায়-
“আমি বাংলায় গান গাই,
আমি বাংলায় গান গাই
আমি আমার আমিকে চিরদিন
এই বাংলায় খুঁজে পাই।”
সাথে তোতা, ময়না আওড়াতো বুলি,
বিদেশী কিছু ভিখারী;
মোর ভাইদের শিকারী,
করে বিদ্বেষ দেয় তারা নির্দেশ
বাংলা নেহি উর্দূছে গাও কাওয়ালী।


ভাইদের হৃদয় দিলো নাড়া
ভঙ্গ করলো জারি করা ধারা।
নিষ্ঠুর তারা ছুড়লো গুলি
ভাই হারিয়ে তাই শুধু বলি,
“আমি বাংলায় কথা কই,
আমি বাংলার কথা কই
আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি,
বাংলায় জেগে রই।”
এ যে আমার ভাই হারানো
মা’র শেখানো গুলিবিদ্ধ বুলি।