-: বড় কবিতা-৪২:-
মুক্তার মুক্তি
মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
মুক্তারে আজ মুক্তি দিলাম,পনেরো বছর পরে,
বাপ মায়ের হাতে তুলিয়া দিলাম বিয়ে শাদির তরে।
চার বছরের ছোট সে মুক্তা,হয়ে গেছে উনিশ বছরের যুবতি,
জন্মগত সুন্দরী সে,যৌবনে হয়েছে আরো অনেক রূপবতী।
যদিও মেয়ের মতন করেছি লালন,নামাজ রোজা সে করিত পালন, মেয়ের চেয়েও বেশি ছিল সে আপন,
যদিও পড়াতে পারিনি স্কুলে,নিজে পড়িয়েছি বই হাতে তুলে,শিখিয়েছি সুন্দর জীবন যাপন।
দশ বছর আমরা প্রভাত বেলায়,হাঁটিতে যেতাম রেস কোর্স আর রমনায়,ও না থাকলে বলিত লোকে,মেয়েটি কোথায়?
ও আমারে ডাকিত নানা,আমি ডাকিতাম নাতি,বর্ষা কালেও হাঁটতে যেতাম,হাতে নিয়ে ছাতি,জড়ালাম গভীর মমতায়।
ছেলে মেয়ে বিয়ে হওয়ার পরে,তাঁরা চলে গেল নিজ নিজ ঘরে,
আমি রহিলাম বুকেতে বাঁধিয়া পাষাণ,
ছেলে মেয়ের ফাঁকা স্থান,ভরিতে মুক্তার অবদান,আমিতো দূরের কথা,ছেলে মেয়েরাও বলে মুক্তা করিছে আসান।
জটিল রোগ যাহা কিছু আছে,সবগুলি আমারে ধরিয়াছে,দুবেলা
ইনসুলিন দেয়া,ব্লাড প্রেসার ও সুগারের পরিমাণ নেয়া,তাঁর কাজ,
তাগাদা দিয়ে করায় সময় মত গোসল ও নামাজ,ওয়াসিং মেসিনে ধুইয়ে,ইস্ত্রি করে,পরিষ্কার রাখে আমার সব সাজ।
ডায়াবেটিসে পা ফুলে গেছে,পায়ের নিচে দিতে হবে বালিশ,
গায়ের চামড়া খসখসে হয়ে গেছে করিতে হইবে লোসন মালিস,
কোন সার্টের বুতাম ছিড়েছে,কোন প্যান্ট হয়ে গেছে বেশি টাইট,নাতির অনেক বেড়েছে হাইট,কোন জুতা করতে হবে পালিশ।
ওরে ছাড়া সত্যিকার অর্থেই আমরা হবো অচল,তবুও ওর মঙ্গল তরে,চাপিয়া রাখিয়া চোখের জল,ওরে দিলাম বিদায়,
দশ বছর ওর নানির সাথে,ঘুমিয়েছে এক বিছানাতে,নিজের চোখ ঢাকিয়া দু' হাতে,বলে আমি তোর কে? আমার কী দায়?
রচনা কাল:-
ঢাকা ১৫/১০/১৭
রাত ৭-১৫