(১)


কে ও বাজাইছে বাঁশী, স্বজনি,
মৃদু মৃদু স্বরে নিকুঞ্জবনে?
নিবার উহারে ; শুনি ও ধ্বনি
দ্বিগুণ আগুন জ্বলে লো মনে?–
এ আগুনে কেনে অাহুতি দান?
অমনি নারে কি জ্বালাতে প্রাণ?


(২)


বসন্ত অন্তে কি কোকিলা গায়
পল্লব—বসনা শাখা-সদনে?
নীরবে নিবিড় নীড়ে সে যায়---
বাঁশীধ্বনি আজি নিকুঞ্জবনে?
হায়, ও কি আর গীত গাইছে?
না হেরি শ্যামে ও বাঁশী কাঁদিছে?


(৩)


শুনিয়াছি, সই, ইন্দ্র রুষিয়া
গিরিকুল-পাখা কাটিলা যবে,
সাগরে অনেক নগ পশিয়া
রহিল ডুবিয়া---জলধিভবে।
সে শৈল সকল শির উচ্চ করি
নাশে এবে সিন্ধুগামিনী তরী।


(৪)


কি জানি কেমনে প্রেমসাগরে
বিচ্ছেদ-পাহাড় পশিল আসি?
কার প্রেমতরী নাশ না করে---
ব্যাধ যেন পাখী পাতিয়া ফাঁসি---
কার প্রেমতরী মগনে না জলে
বিচ্ছেদ-পাহাড়----বলে কি ছলে!


(৫)


হায় লো সখি, কি হবে স্মরিলে
গত সুখ? তারে পাব কি আর?
বাসি ফুলে কি লো সৌরভ মিলে?
ভুলিলে ভাল যা----স্মরণ তার?
মধুরাজে ভেবে নিদাঘ-জ্বালা,
কহে মধু, সহ, ব্রজের বালা!


(ব্রজাঙ্গনা কাব্য)