তুমি যে কী ছিলে আমার
ওগো বুঝে এল ঠিক তোমাকে
হুটকরে ছেড়ে আসবার পর,
দরিদ্র অভাবী তোমার বুকেই যে
রয়ে গেছে আমার ফেলে আসা
ঘোরলাগা স্বপ্নের সোনালী শহর


শহরের চিরচেনা পথঘাট সেই পুরনো
গলি, গলির মাথার মসজিদ আর
তার পাশে সাদা ধবধবে চুনমাখা বাড়ি,
বাড়ি ভরা মানুষের কলরব, আব্বার
ধমক আম্মার আদর, ভাইবোনের খুনসুটি
রিক্সার টুংটাং আর কিছু ফেরিওয়ালার গাড়ি


প্রেমিকার যে এলাকা, সেও তো ছেড়ে গেছি
তোমারই কোলে, তোমার মাটিতেই তো সে
হাঁটছে কিংবা ঘাসের উপর বসছে, শীতের
এমন ভূমিকা স্বরূপ আজ নামল যে কুয়াশা
হেমন্তের বাতাসে, কে জানে তার ভেজা আবেশে
অনিচ্ছায় সে আমায় নিয়ে কী কথা ভাবছে


আজও হয়ত তোমার ভোরেই জেগে ওঠছে
অনভিজ্ঞ আরো কোটি প্রাণ, তারা জাগছে আর
ভাবছে তুমি নিরীহ অসহায়, অনেক হয়েছে
আর নয় এবার যেতে হবে ‘তোমাকে’ ছেড়ে,
কেবল দূরের সকালে আমিই জানছি তুমি
নাই, তাই পুরান সুখেরা ডাকে শুধু হাত নেড়ে


যখন ছিলাম তখন তোমায় আমিও তো করেছি
হেলা, চোখ তুলে দেখেনি তোমায় জেনেছি তুচ্ছ
ভেবেছি অজ্ঞানে মহাবিশ্বে তুমি কেবলই ‘আনাড়ি’,
আজ শত সহস্র দূরে এসে একাএকা বসে কী যে
মনোরম লাগে দেখে তোমার গাঢ় সবুজের জমিনে
লাল রক্তের বৃত্ত এঁকে উড়তে থাকা সেই শাড়ী


তোমাকে ছেড়ে এসেই মূলত আজ তোমার
প্রকৃত প্রেমে পড়ে গেছি, ভুলে গেছি অতীতের
সব পাওয়া না পাওয়ার দুঃখ আর পুরনো যতসব
হিসেব নিকেশ,
তোমাকে দূরে রেখে খোদার কসম
আজ মন ভাল নেই প্রিয় বাংলাদেশ।


- আহমাদ মাগফুর / ডিসেম্বর ২০১৬