প্রতিটা দিন অন্তরটা হিম হয়ে থাকে
অনলাইনে খবরের আপডেট দেখতে ভয় লাগে।
কোন দুঃসংবাদ না জানি অপেক্ষা করছে মহামারি কালে?
একদা পরিচিত–অপরিচিত বাঙালিদের কোভিডে আক্রান্ত হয়ে-
জীবনাবসানের খবর আসত নিউইয়র্ক থেকে;
এখন আসছে সারা বাংলাদেশ থেকে।


আমরা এ কী দেখছি সর্বনাশ!
প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে মানুষের লাশ
নাম না জানা অগণিত বেওয়ারিশ লাশ।
মানুষ করোনা টেস্ট করতে গিয়ে
মরছে চিকিৎসার অভাবে অক্সিজেনহীন হয়ে।
শিশু মরছে হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে
যথাসময়ে চিকিৎসার অভাবে,
পথেঘাটেও মানুষ মরছে।


আমরা দুটো ঈদ পার করেছি, তাতে আনন্দের ঘাটতি ছিল
শোলাকিয়ায় বৃহত্তম ঈদের জামাতের মাঠ পড়ে ছিল-
ধু ধু পোড়োভূমির মতো।
জাতীয় ঈদগাহ মাঠ খোলা হয়নি প্রতি বছরের মতো।
বেশির ভাগ মানুষ বাড়িতেই নামাজ সেরেছে যে যার মতো,
কেউ কারও সঙ্গে মোলাকাত করেনি আগের মতো।


একটা পয়লা বৈশাখ পার হলো এবার;
রমনার বটমূলে বসেনি ছায়ানটের
বর্ষ আবাহনী সংগীতের আসর!
হয়নি মঙ্গল শোভা যাত্রা,
আনন্দময়ীর আগমনে সঞ্চারিত হয়নি আনন্দবার্তা।
গ্রামগঞ্জে বসেনি চিরাচরিত গ্রামীণ মেলা।
লাখ-কোটি প্রাণের স্পন্দনে মুখরিত হয়নি
গ্রামীণ পরিবেশে বসা বৈশাখী মেলা।

এখন মা পারছে না অসুস্থ সন্তানের কপালে হাত রাখতে,
সন্তান প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না মায়ের ঘরে ঢোকতে।
ডেন্টিস্ট চেম্বার খুলে বসছে না,
দাঁতের ব্যথায় কাতর হওয়া সত্ত্বেও রোগী যাচ্ছে না।
পরস্পর পরস্পরকে সম্ভাব্য করোনাবাহী ভাবছে;
সম্ভাব্য ঘাতক মনে করছে।
কেউ কারও কাছে যাচ্ছে না
কেউ কারও সামনে মুখ খুলছে না।
মানুষ ভুলে যাচ্ছে স্পর্শ,
মানুষ ভুলে যাচ্ছে কাছে যাওয়া।