প্রিয়তমা, তুমি কেমন আছ,
তোমার তো ভাল থাকার কথা নয়
আমাদের জীবনের অনেক মূহুর্তের হল ক্ষয়
কালের ঘড়িতে পেরিয়ে গেল জীবনের অনেকটা সময়।


ওরা যখন আমায় ধরে আনলো
তখন তুমি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা,জানিনা
আমাদের ছেলে হয়েছে, নাকি মেয়ে।
তুমিও তো জানোনা আমি বেঁচে আছি কিনা।হয়ত,এই ধরণীর পরে আমায় আর পাবেনা খুঁজে
প্রিয়তমা, তোমার মনে পড়ে,
ক্ষেতের আলপথ দিয়ে হেঁটে যেতাম নদী পারে
                 কাশবনের ঝাড়ে।
হেমন্তের বিকেলের নরম রোদে পেতাম নবান্নের ঘ্রাণ
তোমায় বলেছিলাম বাংলার সবুজ ডাঙ্গা
হয় যেন আমার মরণের স্থান।


জিঘাংসার স্রোতে,লোভাতুর রাষ্টসমাজের চরম নৈরাজ্যের শিকার
আমার এই বন্দী জীবনের হাহাকার।
অত্যাচারীদের রুদ্ধ কুটিরে বন্দী আমি
কত প্রলোভন দিয়েছিল, বিদেশে চলে যেতে হবে
বাড়ি গাড়ি সুইস ব্যাংকে টাকা,
শুধু ছাড়তে হবে, চির জীবনের জন্য মাতৃভুমি।
আঘাত করেছে আমায়,বিদ্রুপ করেছে বারংবার
তবুও অন্যায়ের কাছে মানিনী হার।
জীবন দেয়া ও নেয়ার মালিক আল্লাহ
তাইত, এখনও আছি বেঁচে
বদ্ধ ঘরে বিলোল অন্ধকারে,
    একটি পাতলা তক্তপোষে,
কেটে যায় দিন আর রাতের অনন্ত প্রহর।
কুয়াশার নিঃসঙ্গ রাতে হিম শীতল ঠাণ্ডায়
দেহমন আছন্ন থাকে কবরের নির্জনতায়।
আমি আজ পুঁজিবাদী বুর্জোয়াদের কয়েদবন্দী,অন্ধকারে খুঁজে বেড়াই সেই সব ক্ষুধিত,
       শোষিত, বঞ্চিত মুখ, যাদের রক্ত চুষে
সম্পদের পাহাড় গড়েছে ধনলোভী রাক্ষস।
     সেইসব নির্যাতিতদের তরে,
উৎসর্গ করলাম আমার এই বন্দী জীবন।
সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখ,প্রিয়তমা
    আমাদের কন্টকিত প্রতীক্ষার পর আসবে
       মুক্তির মাহেন্দ্রক্ষণ।