বিশ্বাসের বিনিসুতোয় বেঁধেছিলাম তোমায়
বড়বেশী নির্ভরতায়।
সঙ্গী হলাম আমরা দুজন জীবনের যাত্রায়,
আস্তে আস্তে সময় গড়িয়ে যায়।
ভালবাসার তানপুরায় জমে যায় ধুলোর আস্তর।
প্রেমটা একসময় কর্পূরের মত
হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
সম্পর্কটা অনেকটা দৈনন্দিন দেনাপাওনা,
জীবনের যাত্রাপালায় মানুষ এভাবেই
অভিনয় করে যায়।
হঠাৎ একদিন নিজের মাঝে
অনুভব করি প্রাণের স্পন্দন,
আন্দোলিত করে আমায়।
ভেবেছিলাম, তুমিও আমার মত শিহরিত,
অকস্মাৎ কালবোশেখীর বৈরীতায়
ছিঁড়ে গেল বিশ্বাসের সুতোটা।
তুমি চোয়াল শক্ত করে স্বৈরাচারী আস্ফালনে
বললে আমায়,ছেলে চাই তোমার।
আমি বললাম, মেয়ে কেন নয়।
মেয়েতো আগাছার মতো,শুধু পয়সার অপচয়।
কথাটা আমার হৃদয়ের অলিন্দে তিরের মত বিঁধল।
শরবিদ্ধ পাখির মত ছটফট করলাম অব্যক্ত যন্ত্রণায়
সনোগ্রাফি করা হল, সময়ের যাত্রায়,
জানলাম আমার গর্ভের সন্তান কন্যা।
তুমি তাকে পৃথিবীর আলো দেখাতে চাইলে না।
যন্ত্রণার ব্যবচ্ছেদে ক্ষত বিক্ষত করলে আমায়,
সন্তানকে আগলে রাখার
অক্ষমতা চোখের কোনে জন্মানো বেদনার
নোনাজলে ভেসে যায়।
পোড়া কষ্টের চিতায়
আমি জ্বলে পুড়ে অঙ্গার।
দিন শেষে নারী একলা,
এ বেদনা আমার একার।
মানবের অবয়বে দানবেরা করে দুরাচার
কন্যা ভ্রণ হত্যার দায় এক নষ্ট পিতার
তাই তোমরা যখন নারী দিবসে
নারীদের অভিনন্দন জানাও,
আমার তখন জানতে ইচ্ছা হয়
পর্দার অন্তরালে থাকা নারী জন্মের রক্তাক্ত
ইতিহাস জানো কজন?