আমি সেই মেয়ে,
   অন্তপুরে যার বাস।
যার দিনের শুরু হাড়ি পাতিল,
ঘর দোরের পরিপাটি বেশবাস।
সংসারের যাবতীয় সব দায়, ভাল সব কিছু সবার
মন্দটাই তার একার।
একান্নবর্তী পরিবার।


যথারীতি দুপুরে খেতে বসেছে সবাই,
  মনটা আজ ভাল নেই,
তাই হয়ত তরকারিতে কম হয়েছে নুন।
তখন শুনতে হয়,
পরের নেই দয়া, অকর্মার নেই গুণ।
সংসারের সব কর্মই যার উপর নির্ভর
নিষ্ঠুর পৃথিবীতে তার নেই কোন কদর।
খুব কষ্ট হয়,মন চলে যায় সুদূর অতীতে।
যখন শুনতে হতো,বাপের বাড়ি তার নয়
শশুরবাড়ি তার আশ্রয়।
বাবা মার দায়িত্ব নিতে হলে
ছেলে হয়ে জন্মাতে হয়।
মেয়েটার কষ্টের বনভূমিতে
গাছের পাতাগুলি বিবর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে।
অথচ, মেয়েটির চারপাশের মানুষগুলো আঁজলা ভরে
যদি
একটু সন্মান আর ভালবাসা দেয়,
মেয়েটি নীলকণ্ঠী হয়ে,
সংসারের সব ক্লেদ আর যন্ত্রণার বিষ
সে একাই শুষে নেয়।
ভালবেসে নিজেকে চিরতরে উৎসর্গ করে
সংসারের বারিধারায়।
আবার যখন কন্যা সন্তানের মা হয়,
তখনও শোরগোল,
বংশরক্ষা আর হল না।
কেউ বুঝলো না ,
মেয়েটির প্রসবের বেদনা।
অবশেষে মেয়েটি শপথ নেয়,
ছেলে কিংবা মেয়ে নয়
উভয়েই তার নিজের পরিচয়।