মোবাইল ফোন বেজে ওঠে টুংটং
মায়ের মসৃন কিন্তু অভিমানি কণ্ঠস্বর
বাবা ইলিয়াস, ছুটি কি হল না!
তোমার বড় অফিসারকে বল না একটু আবার,
একটা কাজ করতে পারবা,  আমাকে নাহয় একটু ফোনে কথা বলায় দাও,
আমি একটু রিকুয়েস্ট করে দেখি।
জোর করে হেসে দেই, অন্তর কিন্তু হাসেনা।
দুমরে মুছড়ে যায় বুকের বাপাজর।
মা হাসেনা কাঁদেওনা। কাঁদলে ছেলেও যদি কাঁদে ডিউটি করবে কে?
মা পোলাও রাঁধে,  গোস্ত রাধে আর
ফোন দেয় ছেলেকে, বাবা কি খাইলি?
মা তুমি চিন্তা কর এত কেন বলোতো
এখানে আমাদের অফিসে গরু জবাই হইছে
চাইনিজ স্টাইলে রান্না হয় এখানে। টক দই দিয়ে রাধে।  এক এক পিচ হাফ কেজি। খুবই সুস্বাদু।
মা বিশ্বাস করেন না।
তুই মিথ্যা বলছিস,  ওসব টাকা দেয়া বাবুর্চি কেমন রান্না করে আমি তা জানি।
হানিফের বিয়েতে মুরগিটাকে পুরিয়ে ফেলছিল। আর ভিতরে কাচা কাচা।
মা! ওটা গ্রিল। ওরকমই হয়।  খুব মজাদার।
নিজের মনকেও আসলে সান্তনা দেয়া।  মায়ের হাতের রান্না হাজার বাবুর্চির গ্রিল থেকেও মজাদার,  আপন।
তবুও ইলিয়াস ভনিতা করে,  মাকে বুজতে দেয়না অন্তরের এ বিশাল ক্ষত।
সাজিয়াও রেগে আছে। প্রতিদিন দেখা হত দুই বার,  তিনবার
অথচ আজ আটটি মাস দেখা হয়নি।  
কথা হয় ফোনে।
তবুও কষ্ট তার বুকে তার ইলিয়াস কেমন যেন হয়ে গেছে চাকরি পেয়ে।
কিন্তু ইলিয়াস যানে জীবন কত কষ্টকর।
মায়ের,  বাপের সাপ্তাহিক ওষুধ
ভাইয়ের নতুন নতুন চাওয়া পাওয়া
বিবাহিত বোনেদের নানা রকম আবদার
বাবা নতুন ফার্নিচার কেনেন বাসায়
কুরবানিতে গোরু আসে।
চাল, ডাল,  মসলা তেল
হিসাব করতে করতে হাপিয়ে যায় ইলিয়াস।
তবুও দিন চলে যায়
ভালো ভালোবাসার মোহে ইলিয়াসদের হাড় ভাঙ্গে ঘাড় ভাঙ্গে না
সমস্ত ইলিয়াসরা সংসারের ঘানি টানে
পরিবারে শুখ আনে অনবরত।