কিছু কথাঃ-


এই কবিতাটি একটু ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা, সম্পূর্ণ অন্য স্বাদের একটি কবিতা।
বাংলার বিখ্যাত সেই সুবৃহৎ মাঠ তালতড়ীর মাঠের কথা আমরা কম বেশী সকলেই শুনেছি, আর তালতড়ীর মাঠে ডাকাতির কথাও শুনেছি, আজ তারই উপর আধারিত মহারাজের এই কাব্য খানি।
আপনারা


একটু হাতে সময় নিয়ে চট করে পড়ে ফেলুন।


**************************************************


শুনুন শুনুন শুনুন; সে এক কাব্য সবারে করি বর্ণন,
ভাগ্যহীনা, স্বপ্নহীনা, নিস্পাপ কুসুমকলির জীবনেরই দর্পণ...।
শুনুন শুনুন শুনুন; সে এক কাব্য সবারে করি বর্ণন!


অচিনপূর গ্রামের কবিরাজ রাম প্রানের একমাত্র কন্যা মধুমতী,
মাতৃহারা মধুমতীর সারা মনের আকাশ জুড়েই ছিল
তার স্নেহশীল পিতা রাম প্রানের স্নেহছবি।


বিধুমুখী, রূপবতী, মধুমতীর...
একসাথে পিতা, মাতার সকল কর্তব্যই করত পুরো রাম প্রান!
কালের চাকা গড়িয়ে চলে; সময় ও তারই পিছে ,
কোন কিছু স্থির নয় এ ধরায় সকলি মায়া সকল মিছে, সময়েরই পিছে পিছে!


বিবাহযোগ্যা মধুমতী, বয়সটি যে তার ষোল;
দেহপট যেন সাজান বাগান; জগত করে আলো।


(মধুমতীর বিয়ে হল আনন্দপুরের জমিদারের একমাত্র পুত্র নব কিশোরের সাথে...... আর শশুর বাড়ি ফেরার পথেই কুখ্যাত সেই তালতড়ীর মাঠ...... সেখানেই রচিত হল নতুন এক কাব্যর...)


আবছা আজ দিনের আলো; সামনেই তালতড়ী,
বরকন্দাজরা জলদি চলো, একটু... তাড়াতাড়ি।
আবছা আজ দিনের আলো; সামনেই তালতড়ী।
হুন হুনা হুন হুনা...... পালকি চলে,
বধুবেশে মধুমতীর মনে নব জীবনের স্বপ্ন দোলে-
হুন হুনা হুন হুনা...... পালকি চলে!!
স্বপ্ন তার দুচোখের তারায়; স্বপ্ন তার মনে-
ঘরকে আজ সে পর করেছে...
নতুন জীবনের টানে!!


সন্ধ্যা আজি ঘনিয়ে এলো তালতড়ীর ওই মাঠে;
আকাশেতে আজ তারার মিছিল চুপি চুপি পথ হাঁটে।
নিস্তব্ধতা আজ চারিদিকে; নিস্তব্ধতা আজ মনে,
এক ফালি চাঁদ উঁকি মারে পূব আকাশের ওই কোনে।
ঝিল্লির রব আজকে সরব; শন শন হাওয়া বয়...
গাছের পাতায় মর্মর ধ্বনি, প্রানেতে জাগায় ভয়।


হঠাৎ আকাশ কাঁপিয়ে, বাতাস কাঁপিয়ে
হা রে রে রে.................. ডাকে ঝড় ওঠে,
পালকি যে তার লুঠ হয়েছে; তালতড়ীর এই মাঠে।


চক্ষে জলে মধুমতী আজ বক্ষ শুধুই ভাসায়,
কালীপদ মা মা ডাকে তারে... অভয় বার্তা দেয়,
ডাকাত কুলে জন্মেছিমা; ডাকাতিই যে কাম,
কালী মায়ের ভক্ত আমি কালীপদ মোর নাম।


মধুমতীর কাতর প্রার্থনা, আর তার আত্মপরিচয়;
কালিপদ'র কিছু ধুসর অতীত ... মনে পড়ে যায়।


(কালীপদর মনে পড়ে যায়- "মধুমতীর পিতা রাম কবরেজ'ই একদিন দুর্ধর্ষ এই
কালী ডাকাতের প্রান রক্ষা করেছিল তার মৃত্যুঞ্জয়ী
চিকিৎসার  মাধ্যমে; তাই এতো বড় বেইমানী যে তার ধম্মে সইবেনা।")


রাম কবরেজের কন্যা তুমি?... অচিনপুরে বাস
মাগো আমায় করো ক্ষমা, ত্যাজি এ শঙ্কা পাশ?!
মুক্ত তুমি; মুক্ত আমি সকল শঙ্কা হরি.....
বিদায় জানাই, নিঃস্ব এ মনে, বিদায়.. তালতড়ী!!!