কিছু কথাঃ-


আজকের এই কবিতাটি একটি সম্পূর্ণ, সম্পূর্ণ অন্য আঙ্গিকের। এটি কল্পনার তৃতীয় নয়ন দিয়ে দেখা একটি কবিতা; আমার মন ক্যামেরা সেই সকল অনির্বচনীয় কাল্পনিক দৃশ্য গুলি আপনাদের জন্য লেখা আকারে প্রকাশ করলো। নাহ...! আর কথা নয় এবার সোজাসুজি কবিতায় আসা যাক।
************************************************


(সব গ্রহেরই এক প্রান্ত আমারা দেখতে পাই, কিন্তু তাঁদেরও যে  অপর আর এক প্রান্ত আছে! যা সম্পূর্ণ অদেখাই থেকে যায়; যা ঘন মিশ কালো অন্ধকার চাদরে মোড়া... আজ মহারাজ, ক্যাপ্টেন জন্সন, ও মহারাজের অভিন্ন হৃদয় বন্ধু রহমান সেই অদেখা রহস্যর সন্ধানে "Royal Voyager" নামক একটি অত্যাধুনিক জাহাজ নিয়ে ভারত মহাসাগরে অজানা, অচেনা সেই গন্তব্যর দিকে ভেসে পড়েছে...)


ক্যাপ্টেন; Anything wrong?, সব কিছু ঠিকঠাক চলছে?
হুম! মহারাজ; আমাদের  "Royal Voyager" তার ভাষাতেই কথা বলছে!
বাহ! আমি এই তো চাই ক্যাপ্টেন, আমরা চলেছি কোথায়...
এখন ভারত মহাসাগরের প্রায় মাঝখানে,
তবে ভাগ্য নিয়ে যাবে ঠিক যেথায়... যাব মোরা সেথায়!
সবই তো ভাগ্যর হাতে সঁপে দিয়েই; শুরু এই পথ চলা-
কেন আজ এতো চঞ্চল মহারাজ? মন কেন তবে এতো উতলা!
সবই অদৃষ্টের হাতে সঁপে দিয়ে শুরু আজ পথ চলা!
অজানা পথেই দিয়েছি পাড়ি সাথী তো কেবল তোমরা?!
এই মহারাজ; রহমান হাজির আর মুখ নয় গোমরা।
হা হা হা হা হা হা...!!!


(এমনই করে দিন দুয়েক কেটে গেলো, সমুদ্র কখনও শান্ত কখনও বাঁ প্রলয়ঙ্কর রুদ্র মূর্তির তাণ্ডবে যেন সব ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। কিন্তু  "Royal Voyager" ও তৈরি তার অত্যাধুনিক 'Anti-sinking" পদ্ধতি নিয়ে; রয়্যাল দুরন্ত গতিতে ভারত মহাসাগরের বুক দিয়ে এগিয়ে চলছিল হঠাৎ...)


চারিদিক শুধু ধুম আর ধুম, গোটা জাহাজ টাকে ঢাকি!
আলোক প্রভাও স্তিমিত এখানে; বন্ধ করে আঁখি!
রহমান! তুমি কিছু দেখতে পাচ্ছ? না আমার মতোই অন্ধ...
মহারাআআ...জ! কিচ্ছুটি পড়ছে'না চোখে, চারিদিকে শুধু কুয়াশার চাদর; আজ চোখ থাকতেও চোখ বন্ধ।
ক্যাপ্টেন ক্যাপ্টেন! এ কোথায় এলাম;
মহারাজ! কম্পাস আজ নিয়েছে বিদায় সময়ও গেছে থেমে;
অন্ধকার এক মরন কুয়ায় আমরা পরেছি নেমে!!


(অভিযাত্রীরা আজ পড়েছে চরম বিপদে,  "Royal Voyager" দুরন্ত গতিতে এক গাড় মিশকালো অন্ধকার স্রোতে ক্রমেই দূর থেকে দূরে হারিয়ে যাচ্ছে; সাথে সাথেই অদ্ভুত এক সমস্যার দেখা দিয়েছে, মহারাজেদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ২০ গুন জরে নিজের দিকে টানছে, যত সময় যাচ্ছে অলৌকিক শীতলতা তাঁদের ক্রমে গ্রাস করছে, তারা দুচোখ খুলতে পারছেনা। হাত পা অকেজো হয়ে কেবিনেই মৃত প্রায় হয়ে পড়েছে। কৃত্রিম অক্সিজেন পরিপূর্ণ কেবিনের অক্সিজেন আর বেশীক্ষণ চলবে না তারও আভাস; ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন)


হ্যালো ক্যাপ্টেন! বোলো রহমান,  শুনতে পাচ্ছেন, কি তীব্র এক ব্যোম ব্যোম গর্জন...
হুম! বন্ধু একি পৃথিবীর সেই আদিমতম সপ্ত সুরের মিলিত শব্দ স্পন্দন?!
আমরা কি তবে মৃত্যু মুখে? মৃত্যুরই পথ যাত্রী?
প্রণাম তোমায়; হে পৃথিবী! বিদায় দীর্ঘ রাত্রি!


(হঠাৎ থেমে যাওয়া  "Royal Voyager"  একটি অপার্থিব ঝটকায় প্রচণ্ড দুলে ওঠে আর দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর ওদের চোখে আলোর কিরন পড়ে, ভয়েজার এর কেবিনে আবার তাপমাত্রা ক্রমশ স্বাভাবিক হতে থাকে, চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসে।
অশক্ত শরীরে ওঁরা দেখে মধ্য গগনে সূর্য, শান্ত নীল ভারত মহাসাগর সোনা রোদে ঝলমল করছে, ওঁরা ধন্যবাদ জানায় ঈশ্বরকে; পৃথিবীর ওই গহীন স্থান থেকে তাঁদের মুক্ত করার জন্য)


                  *** সমাপ্ত ***