কিছু কথাঃ-


{তৃতীয় বিশ্বের এই দেশ গুলির অন্যতম বড় সমস্যা হোল কর্মসংস্থান গত সমস্যা, আর  কর্মসংস্থান এর অভিধানিক অর্থ যাই হোক, সাধারণ মানুষ কর্মসংস্থান বলতে, চাকুরিকেই বোঝেন?!
সুতরাং, চাকরি = (সরকারী/বেসরকারী)!
আমার ঐ চাকুরীর সাতকাহন নিয়েই আজকের এই কাব্য। এই কবিতাটি, কোন ব্যাক্তি বাঁ ব্যাক্তি গোষ্ঠীকে আঘাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা নয়।}


***********************************************
প্রথম ভাইঃ-


উফফস...! আজ যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল-
ঘুরে ঘুরে হাঁটুর মালাই চাকী শুকিয়ে যাচ্ছিলো!
অনেকদিন পর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল?
এবার একটু শান্তিতে ঘুমাব।
জানেন? ঘুমানোর জন্য এক জোড়া জুতসই লাল কাঠের পালিশ করা চেয়ার, টেবিল পেয়েছি!
উপরে তাঁর ঝক ঝকে ৫/৩ ফুট কাঁচ পাতা।
চার চারটে ড্রয়ার; তাঁর পকেট ভর্তি চাবি,
ঠিক যেন নিভৃত স্বর্গ-সুখের হাতছানি...!


আজকাল মাস পয়লায়, নতুন প্যান্টটাই পড়ে যাই!
পুরানো প্যান্টে দু-পকেটেই ফুটো।
নতুন একজোড়া সাফারি করতে পাঠিয়েছি...
বলেছি! পকেট গুলো একটু মজবুত করো!


সেই কোন সক্কাল ১২-টায় আপিসে এসেছি?
কাজের চাপে এখন দুপুর ২-টা... আহহহ...
ঠিক এই সময়টাই হাই টা ওঠে।
ওহ...! কিছু নয় দাদা, ওটা তো আমাদের জন্মগত
অধিকার।
দুই ফাইলের ঐ গ্রস্থ উপত্যকার মাঝে আমি একা... নিপাট ভদ্রলোক,
ঠিক যেমন, শান্ত সুবোধ শিশু মায়ের কোলে ঘুমায়।
আমিও হারিয়ে গেছি, ৫/৩ ফুটের পালঙ্কে।


ঘড়ির কাঁটায় এখন তো সোয়া চারটে,
কাজ যা ছিল করেই ফেলেছি?!
দুটো ভদ্রলোক আসার কথা ছিল...? আসেনি।
যাক, ভালোই হয়েছে!
দুপুরের দিকে তবু তো মায়ের ছোঁয়াটা পাই!
এখন বিকাল ৪-টে, আশে পাশে কোন কাজও উঁকি
মারছে না?
ওঁরা সব্বাই ঐ হলুদ ফাইলের লাল সূতার ফাঁকে লুকিয়ে?!
ঠিক যেন, আমায় টাটা করছে-।
আর বলছে- সুখিদা, অনেক তো হোল আজ এসো?
কাল দুপুরে ওই কাজের পাহাড়ের মাঝে আরেকটা নিরাপদ ভাতঘুম উপহার রইলো


দ্বিতীয় ভাইঃ-


হ্যালো মিস্টার সেন, কটায় আসা হচ্ছে?
এটা কি তোমার Father in law-এর বাড়ি!
করো তো ওই Accountce -  এর কাজ, তাও গণ্ডা গণ্ডা ভুল...?
যাও, আজ তোমার বেতন অর্ধেক কাটা হোল।
স্যার, এমন করবেন না, মাত্র তো ১০-টা মিনিট।
চোপ...! মিথ্যবাদী, শুধু ফাঁকিবাজি?!
এই নাও ফাইল, এটা পুরো করে তবেই আজ বাকি কথা কবে...!
OK বস তাই হবে।


তখন দুপুর ২-টা, মার্চেন্ট অফিসের এক কোনায়
ফাইল নিয়ে হিসাব মেলাতে ব্যাস্ত,
তাঁর জীবনের হিসেব যে কে মেলাবে, তাঁর ঠিক নেই
তবুও চোখে মোটা চশমা, বুকে চাপা উৎকণ্ঠা নিয়ে কোম্পানির মঙ্গল কাজে জীবন সমর্পিত...?


ঘড়ির কাটা সুখ চরণকে দেখতেই থাকে; আর সুখচরন ও তাঁকে...!
৪-টে পেরিয়ে ৫-টা, ৬-টা, ৭-টা...
বস! আজ সন্ধ্যায় একটা কাজ ছিল!
হা হা হা...! কি যে বোলো, এই দ্যাখ এই বিল গুলো এই সবে এলো।
বস! আজ সন্ধ্যায়...  একটা... কাজ ছিল!
এগুলি পুরো করে তবেই কোন কথা বোলো।


ঘড়ির কাঁটা এখানে, অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা, বড্ড মেপে চলে,
রাত বারে ৮-টা... ৮:৩০... ৯-টা,
ওপার থেকে ডাক আসে... কাল ঠিক সকাল ১০-টা।


বিদ্রঃ- জানি আজকে বেশ খানিকটা দীর্ঘ হোল, কিন্তু, এই বৈপরীত্য টা তুলে ধরতে হলে এই টুকু সময়ও কি বেশী...?