খোরস্রোতা নদী ছিলাম যখন
দু'কুল ভেঙে কিছু গড়িনি তখন।
এখন প্রায় মৃত তটনি সম
দেহখানি নিস্প্রভ হয়েছে মম।
জল ছিল বল ছিল মোর দেহ মাঝে
লাগাতে পারিনি তাহা কোন ভাল কাজে।
গটি বাটি হাতে কত এসেছে তিরে
কিছুইনা পেয়ে তারা গিয়াছে ফিরে।
পাশেই ছিল কত চৌচির ভূমি
করুণা মেঙ্গেছিল, ''দাও কিছু তুমি,
উর্বর করি মোর দেহখানি
তাতে কি হ্রাস পাবে তোমার পানি?
গিরির ঝর্ণাধারা দিয়াছে তোমায়
দয়াকরে কিছু তার দাওনা আমায়।''
উত্তরে কয়েছিনু দম্ভভরে,
''এমন কথা বল কেমন করে?
আমার যা আছে তা কেবলি আমার
কি করে কহিলে তা নিয়াছি ধার?
সিন্দু সম মম বড় দেহখানি
তাহা কি ভরিতে পারে ঝর্ণার পানি?''
শুনিয়া গিরির ঝর্ণা অলকে হাসে,
''দেখিব দু'দিন পরে কে থাকে পাশে?
আমার যা ছিল আমি দিয়েছিনু তোমায়
বিনিময়ে কিছু দিতে হয়নিতো আমায়।
অবদান কিছু তার নাহি স্বীকারিলে
তোমার মত অকৃতজ্ঞ ভবে কি মিলে?
গতিপথ আজ হতে করে দিলুম বাঁকা
দেখি কি করে চলে তব দেহ চাকা?''
সেই হতে থেমে গেল মোর স্রোতধারা
পিপাসায় দেহখানি হয়ে গেল সারা।
এখন মোর দেহ মাঝে শুধু বালুচর
এক বিন্দু দেবার মত নেই অবসর।
তাপদাহে পোড়া মোর তপ্ত দেহ
এক ফোটা বারি নিতে আসেনাতো কেহ।
শস্য-শ্যামলে ভরা আমার দু'ধার
মাঝখানে দেহ মোর তপ্ত তামার।।