কে যাও সুজন মাঝি
          ভাটির কোন গাঁয়?
আমার একটি খবর যদি
          নাওগো তোমার নায়,
গাঁয়ের নামটি 'শিমুল তলা'
          বাপের নাম 'মনাই'
আমি ছাড়া আমার বাপের
          আর যে কেহ নাই।
বড় ঘরে বিয়ে যদিও-
          ভাত কাপড়ের সুখ
মনের কোনে লুকিয়ে থাকে
          শত সহস্র দুখ্।
দুই বেলা দুই মুঠো-
           নুনতো ভাত খেয়ে
সুখে আছে কত মেয়ে
          স্বামীর আদর পেয়ে।
ননদ-দেবর, শ্বাশুড়ী, জা
          কেমনে যেন চায়
এসব কিছু বলো না যেন
          আমার বাপের ঠাঁয়।
সব যদি শুনে আমার
          জনম দুঃখী বাপ
কেমন করে সইবে বল
          এত দুঃখের চাপ?
আমার দুঃখ যদিও ভুলি
          পেট ভরে খেয়ে
বাপজান আমার সইছে দহন
          দু মুঠো না পেয়ে।
কে দেয় রেধে বেড়ে
          কে দেখে জ্বরে?
আপন যাহার নাই জগতে
          করবে কি আর পরে?
কন্যা হয়ে জন্ম নেয়া
          হলো বড় পাপ
শেষ দেখা হবে না হয়তো
          যদিও মরে বাপ।
বাপের ব্যাথা আমি বুঝি
          এরা বুঝবে কি?
{এ বাড়িতে} আমার মত গরীব দুঃখী
           আসেনি কোন ঝি।
বাপের কথা মনে করে
          কাঁদি ঘরের পিছে
চোখের পানি বুক ভাসিয়ে
          গড়িয়ে পড়ে নিচে।
বাপজানকে দেখতে আমার
          কলিজা যায় চিড়ে
কেমন করে যাব আমি
          শক্ত বাঁধন ছিঁড়ে?
দয়া করে বল মাঝি
          আমার বাপের ঠাঁয়
বাপজির বিহনে কন্যার
          প্রাণ বুঝি যায়।
ভাদ্র মাসটি পার করে
          সামনের আশ্বিন মাসে
বাপজান যেন কেরাই লয়ে
          নাইওর নিতে আসে।।