একটি মানব জীবন শতটা পদ্মা সেতুর চেয়েও দামি
হোক সে জীবন রাস্তার, ফুটপাতের কিংবা প্রাসাদের
কিংবা আরো অনেক কাছের বা দূরের।
আবার এক কোদাল মাটিও হাজারটা প্রাণের চেয়ে দামি
হোক তা ডোবা, নালা কিংবা নর্দমার
কেবল যদি হয় তা স্বীয় মানচিত্রের।
জীবনটা মূল্যহীন যেথায় পতাকাও মূল্যহীন সেথায়।
কারণ জীবনকে বাঁচাতেই পতাকা
আবার পতাকার সম্মান বাঁচতেই জীবন।
প্রিয় পতাকা,
আমারাতো লক্ষ প্রাণ দিয়েছি তোমাতে
আমার পুত্র প্রাণ অক্ষত থাকে যাতে।
কিন্তু তারাতো অক্ষত নেই,
অহরহ ঝরছে পরছে সকাল-দুপুর-রাতে,
জলে - জঙ্গলে, রাস্তায় কিংবা ফুটপাতে।
তোমার কিচ্ছুটি যায় আসেনা তাতে, নির্লজ্জ পতাকা?
ত্রিশ লক্ষের রক্ত ভানে ভেসে এলে আমার অঙ্গনে
আরো কি চাই? কত পিয়াস তোমার?
তুমি যদি লজ্জিত - মর্মিত না হও তো আমি উষ্ণিত হব কেন?
হারিয়ে সব কূল দিয়েই যাব শুধু ফুল?
এত বোকা ভেবনা যেন।
জানি, তুমি আমার পুত্র অপেক্ষা প্রিয়,
কিন্তু তাতো সমরে-সংগ্রামে।
স্বাধীন, শীতল, শান্ত বলয়ে আমার পুত্রওযে তোমা অপেক্ষা অধিক প্রিয়,
তার অকাল মৃত্যু হতে দেব না আমি কিচ্ছুটির বিনিময়ে।
তোমার দুর্দিনে,
আমিতো ওকে ঠেলে পাঠাবই রনাঙ্গনে,
মায়ের স্নেহের আঁচল ছিঁড়ে, মম বুকের পাঁজড় চিঁড়ে,
তোমাকে তুলে দিয়ে হাতে বলব, "যাও বাবা,
একে সমন্নত রাখ শৈল শিখড়ে
কিংবা হযরত জাফরের ন্যায় পুতে রেখ বুকের নরম জমিনে,
প্রাণ প্রদীপ নিভে যাক, তবুও পরতে দিওনা ভূ-তলে।''
মা মাতৃকার জন্য যে সন্তান নয় সেতো কুলাঙ্গার।
কিন্তু আমার মাতৃপ্রেমী, মানচিত্র প্রেমী সন্তানটিকে কেন বারংবার মরতে হয়
দুবৃত্তের হাতে?
সকাল - দুপুর - রাতে রাস্তায়, গৃহে কিংবা ফুটপাতে
দিনের শান্ত শীতল আবহে।
তাদের রক্তাক্ত দেহে ভর করে তুমি কি করে  উড়ো ডানা মেলে?
মাতৃভূয়ে প্রান খুলে একটুওকি দোঁড়াবার অধিকার নেই তার?
একটুও কি সাতার কাটবার অধিকার নেই পদ্মা, মেঘনা, যমুনায়?
একটুও কি অধিকার নেই হেমন্তের কাশফুল ছুঁয়ে দেখবার?
একটুও অধিকার নেই নির্বাচনে ‌‌‌'আপনাকে' পাবার?
কিংবা একটি মাত্র ভোট দেবার?
কিংবা ঘুষ বিনে তোমার খেদমতে একটি পদ পাবার?
নেই, নেই, নেই, কিছুতেই নেই তার অধিকার
কারন, তুমি যে অন্য কার।
অধিকার আছে শুধু অন্য হাতে মরবার,
সকাল-দুপুর-রাতে,
রাস্তায়,গৃহে কিংবা ফুটপাতে।
তুমি কি পারোনা মায়ার হাত খানি একটু দিতে বাড়িয়ে ?
পারো না? পারো না? পারো না?
তবে আমিও পারবোনা যেনো, শ্যালুট জানাতে তব
মম সন্তানের রক্তাক্ত লাশের উপর দাঁড়িয়ে।।