আমার আছে আল্লাহ্ খোদা তাহার বগবান
সবার কাছে সবার খোদার একই রকম মান।
মসজিদ আমার এবাদত ঘর, নামাজ পড়তে যাই
তাই বলে কি মন্দিরে ঢিল ছুঁড়তে হবে ভাই?
মসজিদ,মন্দির,প‌্যাগো,গীর্জা থাকুক যেথায় আছে
শিবের দেহে আগুন দিলে খোদা ভেজার পাছে।
ধর্মে ডাকো নয়কো জোরে ভালবাসার গুনে
সত্য ন্যায়ের আলো যেন থাকে তোমার মনে।
খোদাকে করতে খুশি কেন হাতে লাঠি?
আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেই বৌদ্ধ-বিহার বাটি।
মন্দির ভাঙলে খোদা খুশি ভাবে যে বান্দা
আসলে চোখ থাকিতে সে একটা আন্দা।
সৃস্টিকে কস্ট দিলে শ্রস্টা হবে রাজি
এমন দুর্বুদ্ধি আশা কেমনে কর পাজি?
আল্লাহ্ রসূল কিসে খুশি আগে হবে জানতে
তারপর নয় কুড়াল হাতে যাব ওসব ভাঙতে।
যাদের হাতে তৈরি ওসব তাদের মনে দাও আলো
তাদের হাতেই দূর হবে শিরক-বিদাত সব কালো।
মূর্তি পূজা করে যদি মহাদোষ করে সে
শাস্তি দেবে সে আল্লাহু সৃস্টি তাহায় করছে যে।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টানের বন্ধ হয়নি খানা
চন্দ্র-সূর্য আলো দেয় মেলে তাদের ডানা।
নদী-ঝর্না পানি দিয়ে মেটায় তাদের তৃষ্ণা
তোমার আমার মনে কেন মিছে এই বিতৃষ্ণা?
বাগিচার ফুল দেখেনা কে হিন্দু কে মুসলমান
সবার মাঝে সমান তালে বিলায় তার সুঘ্রাণ।
খোদা যদি লালন করে দিয়ে সব রহমত
তবে কেন তাঁহার সাথে তোমার আমার ভিন্নমত?
দুর্ঘটনায় মরলো পথে মোল্লা মোড়ল দুই ভাই
কার দয়াতে বেঁচে গেল সুনীল পুত্র নিতাই?
লঞ্চ ডুবিয়ে পদ্মা খেল হাজী গাজী কত মীর
ঠাকুর বাড়ীর রুগ্না রমেশ কেমনে সাতরে পেল তির?
ঘটা করে পূজা মাঙ্গে রমেশ নিতাইর বাপ মায়
বাঁচাল সে আমার খোদা অর্ঘ দেয় দেবীর পায়।
আল্লাহ্ যদি সহে তাদের অবাধ্যতার সমুদ্র
তবে কেন আন্দা চোখে তোমার আমার বিদ্রোহ?
ধর্ম যুদ্ধ করতে হলে আগে ধর্ম বুঝতে হয়
নিজের মনের বদমূর্তি শাবল দিয়ে ভাঙতে হয়।
তুমি যে বিশ্বাসে করছো নামাজ রোজা পালন ভাই
স্বরপ বিশ্বাস তাদের মনে করছে তারা পূজা তাই।
ভূমিষ্ঠ হয়েই তুমি শুনেছিলে আযানের সুর
তাইতে তুমি মূর্তি-মন্দির করে রাখলে বহুদূর।
তেমনি ও শুনেছিল ঠাকুমার ‌'উলু গান'
‌'আল্লাহ্' 'রসূল' না বলে ডাকতে শিখলো 'বগবান'।
গৃহ বাইরে জানার ইচ্ছা না ছিল তোমার তার
তাইতো তোমার মুখে 'সালাম' তার মুখে 'নমস্কার'।
পৈত্রিক পাওয়া ধর্ম নিয়ে চলছি মোরা দুই পথে
মারা-মারি, কাটা-কাটি করছি শুধু দিবা-রাতে।
হিদুর ঘরে জন্ম নেয়া তার যদি হয় পাপ
সেই পাপের অংশ মোদের কেমনে বল পাব মাফ?
তোমার আমার জন্ম যদি হত মুচি মালুর ঘর
ওদের মত পূজো দিয়েই হত মোদের সময় পার।
ঘৃনা দিলে ঘৃনা মিলে ভক্তি মিলে বিশ্বাসে
আঘাত দিয়ে ভালবাসা পাব বল কোন আশে?
পূঁজা-অর্চ অতি খারাপ মুসলমানের চশমাতে
নামাজ-রোজা তেমনি দেখে হিন্দু তাহার চোখপাতে।
'হরি' 'হরি' নাম যপ আমার কানে করে জ্বালা
আযান, জিকির শুনলে হিদু তার কানে দেয় তালা।
জন্ম সূত্রে হিন্দু হওয়া হয় যদি দোষ তার
সেই দোষ পুরোটাই আমি দিলাম বিধাতার।
সঠিক পথে ডাকতে তাদের দায়িত্বটা ছিল কার?
ষাট বছরের জীবটাতে ডেকেছ কি একটি বার?
আল্লাহ্ ওদের ধরবে পরে আগে ভাঙবে তোমার দাঁত
দুনিয়াতে বসে মারাও, 'কে উঁচু কে নিচু জাত?'
অন্দলোক হাটলে পথে কাদা কাঁটার বালাই নাই
চোখ থাকিতে তুই শালাকে কেন ডোবায় দেখতে পা্ই?
পাগড়ী-টুপি মাথায় দিয়ে গলা ফাটাও, 'হিন্দু ধর'
গলার আওয়াজ থাকে কেমন দেখা যাবে দুদিন পর।
ভুল যদি করে বালক বুঝাও তারে বার বার
না বুঝিয়ে শক্ত হাতে কচি গালে মার চড়?
তোমার আমার কাজটি শুধু দেখানো যে সঠিক পথ
তাতে যদি ফল না হয় হোক থাকুক তাহার ভিন্নমত।
হেদায়েত দেবে খোদা তোমার আমার সাধ্য নাই
আমাদের কাজটুকু ভাই আমরা শুধু করে যাই।
জোর-জুলুম, টানাটানি ধর্মে বড় নিষেধ যে
নাবীর আদেশ না মানিলে বিপদগামী হবে সে।
হিন্দু, বৌদ্ধ মারলে বাংলায় মুসলিম মারবে গণচীন
কারণ তোমার সুরে তারা বাজাবে যে একই বীণ।
সংখ্যায় বেশিতে জোর দেখায় জন্তু-জানোয়ার
মানুষ মারতে মানুষ কি হাতে নেয় তলোয়ার?
ধর্ম না চিনিয়া তোর কর্ম করে লাভ কি বল
অযথাই দাড়ি, টুপি গাছে ঝুলা মাকাম ফল।
ঘৃণা ভরে গীতা-বাইবেল রাখলে দূরে সরিয়ে
কেমন করে আনবে পথে কোরান-হাদিস পড়িয়ে?
তাদের যদি শুনাতে চাও ‌'আকাশ বাণী'র অমিয় গান
তোমারও যে শুনতে হবে অন্য সুরের ভিন্ন তান।
এমনি করে শুনে শুনিয়ে বাজবে কানে সঠিক সুর
লাঠি-কাঠি, অগ্নি-মশাল বিনেই হবে আধার  দূর।
'ওম শান্তি ওম শান্তি' শুনলে কানে দাও তালা
তবে কেন শুনবে তারা 'ইকরঅ বিসমি রব্বি ক্বলা'?
শুনাতে চাইলে ভাল শুনতে হবে তাদের কালো
তোমার কাছে কালো যাহা তাদের কাছে হয়তো আলো।
কালো আছে বলেই তো আজ আলোটা দেখতে সাদা
দিনের বেলা চাঁদের প্রেমে পড়ে বল কোন গাঁধা?
যেই ভূমিতে দাঁড়িয়ে তুমি সেই জমিনে তাহার পা
এক পবনের পরশ পেযে জুড়ায় তোমার তাহার ঘা।
আল্লাহ্ তোমার সৃস্টিকর্তা যদি মান তাদের না
তবেই ওদের মারো কাটো তাতে আমার নেই মানা।
রমিজ মিয়ার পাটের পাশে নিতাই বাবুর ধানের ক্ষেত
সে ধানেরই পিঠে পায়েশে ভরছে আবার রমিজের পেট।
এক জমিনের সবুজ ফসল পাশাপাশি পাট ধান
তাদের গায়ে কোথায় লেখা হিন্দু আর মুসলমান?
সোনার ফসল উঠছে বেড়ে এক আল্লাহুর ইশারায়
'মানব' ফসল পুড়ছে কেন বিবেক বর্জ্য দাহ খড়ায়?
'বাবরি' ওরা ভাঙে ভাঙুক, তুমি কেন ভাঙবে মঠ?
তুমি যদি ভাঙ, তবে ভিন্ন কিসে দৃশ্যপট?
মনের পশু কর জবেহ ভালবাসার ছুড়িতে
সুশোভিত গৃহ চাবি দেখবে তোমার ঝুড়িতে।
মানব প্রেম বাদ রাখিয়া নামাজ রোজা যাই বলি
মক্কাতে যাওয়ার সামিল পূর্ব দিকে পথ চলি।
ধার্মিক যদি হতে চাও মানুষ হও তার আগে
পশু পাখির লাভ কি বল নামাজ-রোজা-সেজদাতে?
শ্রেষ্ট ধর্ম দাবি করলে শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে হয়
মনে প্রাণে শ্রেষ্ঠ হবে, গা-গতরে শ্রেষ্ঠ নয়।।