‘তুই কথা কইস না, তুই নিষিদ্ধ’
তসলিমার এই কথাটি বড্ড
কানে বাজে, বাজে কানে
কী কথা কইতে চায় নিষিদ্ধ, কে জানে!
 
তুই আবার কী কথা কইতে চাস, তুইতো আমলা
তোর জীবনের গোটা মামলা
তো এখানেই ডিসমিস
তুইতো প্রভুর নিমক খেয়েছিস
হারামি করতে পারবি না আর
কখনো। কেন বৃথা ভাবিস বারবার
তোর বুকে-পিঠে প্রভুর আনুগত্যের লেভেল সাঁটা
হাতে-মুখে আছে পতিব্রতার উল্কি আঁকা
তাই কিছু ভাবা,বলা,কিংবা করা তোর জন্য একেবারেই হারাম
তুই বরং শান্তিতে থাক, শুধু ভোগ কর আরাম!
 
তুই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি-এটা কেন ভাবিস
বৃথা, কেন ভাবিস তুই সবকিছু বলতে পারিস
কোথায় প্রজাতন্ত্র, কীবা তার চেহারাটা
লন্ঠন দিয়ে, দূরবীন দিয়ে খুঁজে কি পেয়েছিস তা?
তুই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি -একথা কে বলেছে তোরে
এসব কেবলই কেতাবি গরু, বেমালুম ভুলে যা ওরে
বেমালুম ভুলে যা। শুধু সেই পারে, অস্ত্র যারে দিয়েছে ক্ষমতা
আর ক্ষমতা যাকে দিয়েছে বারতা
শুধু সে-ই পারে
কখনো তুই নারে, তুই নারে
 
ভাবছিস-বিবেকের বিরুদ্ধে ঘুরে
কেবলই মগজের সাথে বেইমানি করে
কী করে পথে চলবি
কী করে কিছু ‘না’ বলবি
সকলেরে। কী করে সইবি অনাচার
কী করে ফিরাবি মুখ, বন্ধ করবি দুয়ার
সবার সামনে।দিকেদিকে আগুন জ্বলে
আকাশে-পাতালে, জলে-স্থলে
আত্মা পুড়ে একেবারে খাঁক হয়ে যায়
তুই আমলা, তোর কি নেই কোন দায়!
-এসব কথা ভাবছিস বসে?
ভাব, ভাবতে থাক, পড়বি অবশেষে
যমের দুয়ারে
দেখ, চারিদিকে জঙ্গল-ভীতি, ধরবে বুনো শুয়ারে
তাই বলি- তুই কথা কইস না, তুই আমলা
তুই প্রভুর নিমক খেয়েছিস, তুই প্রভুর কামলা।
                         (রচনাকাল-ডিসেম্বর ২০২২)