গোলাপ জলে স্নান করে কন্যা
                              যখন উঠল
দোয়েল,কোয়েল ,শ্যামা,বুলবুলি
                             তার পানে চাহিল।
কোনবা তোমার বাড়িগো কন্যা
                            কোনবা তোমার দেশ
ছল-ছল চাহনী গো কন্যার
                            দীঘল কালো কেশ।
কেবা তোমার ,মাতাগো কন্যা
                        কেবা তোমার পিতা
কেশ বানতে আনছোনি কন্যা
                         হলুদ রঙের ফিতা।
আলতা রঙের পাও গো কন্যার
                                অর্ধচন্দ্র মুখ
দেখিতে কন্যায়,লাগে
                           অন্তরেতে সুখ।
হাসিতে ফোটেগো কন্যার
                         হাসনাহেনা ফুল
কানেতে পরেগো কন্যা
                        বকুল ফলের দুল।
হাটতে যখন কন্যা
                        পা’দুখান ফেলে
দূর্বাঘাস দেখেগো কন্যায়
                 চোখ দু’খান মেলে।
চন্দ্রদ্বীপে বাড়িগো আমার
                     পূর্ণি আমার নাম
পাখ-পাখালী ,পশু-পাখি
                      সবারে সালাম।
বাপের নামটি দেওয়ান মাঝি
                    মায়ের নাম তারাবালা
গলাতে পড়েছি আমি
                       কদম ফুলের মালা।
গ্রামের নাম সোনাপুর
                       বাড়ি নদীর পাড়
উজান মাঝি দাদা আমার
                     সেই গাঁয়ের মাতবার।
সেই গাঁয়ে বাস করে
                     মোহন খান নাম
আমারে ভালোবাসা
                     তার নাকি কাম।
করিলে সওয়াল একদিন
                     আমায় খুলে কয়
বিয়া নাকি করবো আমায়
                       না যেন করি ভয়।
না, যদি পায় আমারে
                      শোনো মন দিয়া
এই দুনিয়ায়,নিজের পরান
                    নিজেই দিবো দিয়া।
রাস্তা দিয়া যাইতে একদিন
                     সামনে অইলো খাড়া
ভালোবাসি তোমায় আমি
                     বাঁচুম না তুমি ছাড়া।
তুমি আমর মানিক, রতন
                     তুমি আমার পরান
না পাইলে তোমায়
             নিজ হাতে জান করুম কোরবান।
বাপের কাছে, যাইবোরে মোহন
                        যাইবো মার কাছে
কথার সময় আমার নাকি
                     থাকতে অইবো পাশে।
হঠাৎ একদিন সন্ধ্যাবেলা
                         পুকুর পাড়ে খাড়া
বাপের লগে কইবো কথা
                   আছে নাকি তার তাড়া।
বাপের সামনে দাড়ায় মোহন
                     মায়ের সামনে দাড়ায়
মাথা নিচু কইরা রাখে
                           কথা নাহি কয়।
এমন সময় মা-জননী ,কয়
                            বাবা কি চাও?
তাড়াতাড়ি উইঠা দাড়াও
                          ধরছো কেন পাও?
মোহন দাড়ায় বাবা, কয়
                         মতলব কি তোমার?
কোনো কথা না কইয়া
                         বাড়ি ছাড়ো এবার।
মোহন কয় বাবাজান
                        পূর্ণি আমার জান
না পাইলে, পূর্ণিরে
                 নিজ হাতে দিমু আমার পরান।
এ কথাতে মায়ের চোখে
                        জল আইলো নেমে
হাসি, আনন্দ সবকিছু
                           আস্তে গেল থেমে।
বাবা কয়,আমার মেয়ের নাম
                         জপো যদি আরেকবার
এক কোপে গলা কাটুম
                     বাচঁতে পারবানা আর।
এবার কিন্তু মা-জননী
                       ধরলো বাপজানের পাও
ক্ষমা করো অগো দুজনরে
                             আর করিওনা রাও।
আমি ধরলাম বাপজানের হাত
                        বাবাজানগো শুনো
মোহনরে যদি না পাই
                    এ ভবে চাওয়া নাইতো কোনো।
অনেক কাকুতি,মিনতির পর
                               বাবাজান কয়
অনুমতি দিলাম আমি
                         আর করিওনা ভয়।
মেয়ে আমার সোনালক্ষী
                        রাখিও তারে যতনে
মেয়ের চোখে পানি দেখলে
                          বাচুঁমনা ভুবনে।
শোনো বাবা, সম্পত্তি আমার
                       অর্ধেক দিলাম মেয়ের নামে
সম্পত্তি গুলান, তুমি বাবা
                        লাগাইয়ো ভালো কামে।
মা-বাবার দোয়া লইয়া
                         করলাম দুজনে বিয়া
পূর্ণি ,মোহনের সংসার জীবন
                           ভরা, সুখ ,শান্তি দিয়া।