আমি তখন তিন বাড়ীতে কেবল কাজের মেয়ে
হাতের শিরায় টান পড়েছে
মুখে শীতের ভাজ
বাবুর দোয়ায় মিলের কাপড়
হৃদয় ফোটা তাজ
রহস্যেরা উথলে ওঠে
বৈঠকে মস্করা
দশ হাতের এই কাপড়খানায়
কেবলই আসকারা
বাবুর ঘরে নানান সুখে বৌদি মণির বাস
আমি কেবল কাজের মেয়ে
ঘনায় সর্বনাশ ।


ছাতের কোঠায় দাঁড়ায় এসে চাপদাঁড়ির
এক ছেলে
বালতি ফেলে ঠায় চেয়ে রই
বসন মাজা ভুলে ।
বুকের ভেতর হাজার স্রোতের
জোয়ার ভাসে সুখে
অচীন কেমন ভালোলাগা ঘনিয়ে
আসে বুকে।
ভীষণ চুপে সেদিন হঠাৎ পাড়ার
মেলার মাঠে
প্রেম এল এক কাঁপিয়ে হৃদয়
দুরন্ত দিন কাটে।


তুমি আমার আমি তোমার
বাজছে কলের গান
আয়না জুড়ে বৌ সেজেছি
গায়ে আঁতর ঘ্রাণ।
ছুটির দিনে মন পরেছে
লং ড্রাইভের ট্যুরে
ভীষণভাবে একলা আছি
হৃদয়ে ছাঁদ জুড়ে।


বিকেল তবু ঘনিয়ে আসে
অশ্রুতে চিকচিক্
বাসন কোসন ঢাই ছড়ানো
ময়লা চতুর্দিক ।
বুকের ভেতর আগুন তবু
পোড়ায় মনের ঘর
আমার কেবল ফুরিয়ে যাওয়া
শানায় পরস্পর।
সেই বিকেলে আঁধার ঘেরা
সান্ধ্য ভ্রমণ জুড়ে
প্রথম দেখি অন্য শাড়ী
অন্য প্রণয় ঘিরে।
শুধায় ডেকে বাসন মাজা
কাপড় কাঁচা আরো
টুকি টাকি মায়না বলো
কালকে থেকেই করো।


আয়না জুড়ে আসমানী মেঘ
একফালি ঘর আমি
কোথায় আমার ছোট্টবেলা
শৈশবী পাগলামি।


দীঘল চোখে জং ধরেছে
ঘনিয়ে আসে রোদ
শরীর জুড়ে আমি কেবল
বাসন মাজার লোক।


তখন আমি বাসন গায়ে
ভীষণ রকম সুখে
লিখছি হাজার স্বপ্ন ঘেরা
তোমার কোমল বুকে।
ঘনিয়ে আসে অশ্রু প্লাবন
চাপা গায়ের রং
বাপ বেচেছে হাজার টাকায়
টোপর পরা সঙ্ ।
ক্রোধ জমছে অগাধ কেবল
স্কুল,কলেজের গায়ে
ছেটাই থু থু খিস্তি,খারি
জন্ম নেবার দায়ে।


প্রথম যখন ছুট্টে গেলাম
মেজ্ দাদার ঘরে
বৌ দি ভীষণ শিক্ষা দিল
চুলের মুঠি ধরে।


আর কাঁদিনা শুকনো হৃদয়
প্রবল মরুচ্ছাস
শুকিয়ে গেছে করুণ কোমল
ঘনায় সর্বনাশ।