ঊষার সূর্য ওঠার আগে প্রার্থনায় মগ্ন হওয়া মা,
লালিমা রক্তবর্ণ শিউলির সুবাস নিয়ে ঘরে এসে দোল খাওয়া সকাল,
অকাল ঝরে পড়া জবার উপর পাখা মেলে বসে থাকা হলদে ডানার প্রজাপতি,
সজাতি প্রতিবেশির ছাদবাগানে ডালিম গাছের তলে-
খরগোশ ছানাদের বিছানা পেতে শয়ন,
নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য নিয়ে বিদ্যালয়গামী শিশুদের কলরব,
নীরব শব্দে হৃদয়ের ভাব বিনিময় করা নব দম্পতির-
ঠোঁটের কোণার লাজুক হাসি,
সাহসী উদ্যোগ নিয়ে খাঁচাবন্দী ময়না জোড়ার মুক্তির দুয়ার খুলে-
দিতে কিশোরী বোনের আবদার,
দাদার পছন্দের তালপিঠা হাতে দাদীর গালফুলা হাসির পশরা,
পায়রা হয়ে উড়ে আসা ভুলে যাওয়া বিখ্যাত কোনো কবিতার পঙক্তিমালা,
জানালার কাচের পুরুত্ব ভেদ করে বিচ্ছুরিত হওয়া মুক্তোমানিকের ঝলক,
পালক মেলে রাজহংসীদের জলাশয়ের জলে ভেসে বেড়ানো-
দেখতে দেখতে নরম ঠোঁটে গরম চায়ে চুমুক,
উন্মুখ হয়ে অপেক্ষারত মায়ের বুকে দীর্ঘদিনের যুদ্ধ শেষে ফিরে আসা-
সৈনিকের আনন্দাশ্রু বরণ....
মরণ- নিশ্চিত, যদিও এসব পার্থিব সমস্ত সুখের দীপ্ত উদাহরণ,
যাবতীয় স্বর্গীয় সুন্দরের নিষ্পাপ উপমা।
ক্ষমা- সুন্দর, তবুও মানুষ নিষ্ঠুর আক্রোশে তৈরি করে ঈর্ষার নরক,
ক্রোধে লণ্ডভণ্ড করে সব পরান্নভোজী ক্ষুধার্ত পশুর মতোন।
যতনে পুষে ক্ষোভ, আক্রোশ মেটে না তবু, যাতনা ব্যক্ত-অব্যক্ত,
রক্তক্ষয়ী হিংসার জ্বরে জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যায়, দুঃখের নীড়ে,
ছিঁড়ে ফেলে জন্মজন্মান্তরের বাঁধন।