এখন নির্জনতা, গোপনীয়তার চাদর হয়ে হাসছে যে চাঁদ।
রাতের বয়স বড্ড বেড়েছে, বুজে আসছে চোখ, ঘুমের ফাঁদ।
আল্লাহর পথে যাত্রীদের এটা নির্ঘুম সময়, যাত্রা শুরুর ক্ষণ।
তাদের আনন্দ ও সুখ কল্পনার ঊর্ধ্বে, সমুদ্রের মতো একটা হৃদয় থাকে।
এই কনকন শীতকেও তারা আলিঙ্গন করে অদ্ভুত পাখির মতো।
পৃথিবী তাদের চোখে কেবলি একটা ঝাপসা ফ্যাকাসে ক্ষয়িষ্ণু পর্দা,
যেটা ভেদ করতে পারলেই পৌঁছে যাবে গন্তব্যে,
সৃষ্টি মিশে যাবে তার স্রষ্টায়।
হে আত্মা,
নিদ্রা ত্যাগ করো, এই তীব্র শীত নিয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ো না।
ঘুম থেকে জেগে ওঠো, ভেদ করো পর্দা।
তোমার প্রকৃত কাজ শুরু করো।
প্রেমের অভিযাত্রা শুরু করো।
নিমগ্ন হও স্রষ্টার ইবাদতে, নিমজ্জিত হও তার আরাধনায়,
পুরো পৃথিবী বিলীন হলেও যে স্রষ্টা বিরাজ করে।
একপাশে রেখে দাও তোমার সমস্ত দুঃখ যাতনা।
ইতি টানো যতো পাওয়া না-পাওয়ার ইতিহাস।
স্রষ্টাকেই স্রেফ যথেষ্ট করে নাও।
নিজেকে অতোটা নিচু করো না, দুয়ারে দুয়ারে কড়া নেড়ো না আর।
এক মুঠো পৃথিবীর জন্য তুমি নিজেকে বিক্রি করো না।
গোলামী চুক্তি ফিরিয়ে দাও।
তুমি যা খুঁজছো অবিরত তা আসমান থেকে আসে।
হ্যাঁ, আল্লাহর আরশ থেকেই আসে, তিনিই একমাত্র সহায়।
সমস্ত প্রশংসা ও প্রাচুর্য যার এবং কৃতজ্ঞতা, তাঁর দিকে নতজানু হও।
অনবরত ক্ষমা প্রার্থনা করো একান্ত নিমগ্নতায়।
মিলনের দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা রাখো হৃদয়ে।
প্রাণপণ চেষ্টা করো যেনো বেহেস্তের দরজা খুলে যায় নীরব কান্নায়।
তখন সেখানে হবে মহা উৎসব,
তোমার চুম্বন করবে প্রকৃত সফলতা,
আলিঙ্গন করবে ব্যাপক পূর্ণতা,
সেখানে কারো অর্জনে কেউ ঈর্ষা করে না,
প্রত্যেকেই পূর্ণতার পরমানন্দে মহা খুশি, সুখী।
হে প্রশান্ত আত্মা,
নয়তো ব্যর্থ হয়ে যাবে, মূল্যহীন হয়ে যাবে,
বিফলে যাবে তোমার যতো ধ্যানজ্ঞান, কর্মযজ্ঞ।
অতএব, নিরাময় খোঁজো, তুমিই নিরাময়ের মহৌষধ।
তুমি নিজেই নিরাময়ের মহান অভিযাত্রী।