কপালে সিঁদুরের লাল ফোঁটা ,
তার ঠিক উপরে চুলের উপত্যকায়
থেমে যাওয়া সিঁদুরে র রক্তিম ঝর্ণা ,
পানের উচ্ছিষ্ট রসে রাঙানো ঠোঁটে
ঈর্ষণীয় গাত্র বর্ণের মোহনীয় মুখ মণ্ডলের দিকে  
তাকিয়ে ভাবতুম -
বিশ্বকর্মা বোধ ভুল করেই আমার মা কে পাঠিয়েছে
পৃথিবীর একটি কোণের একান্নবর্তী পরিবারে।


মা খুব সুন্দর করে গুছিয়ে গল্প বানিয়ে বলতে পারত,
গল্পের বর্ণ নায় কঞ্চির বেড়া ছেদিয়ে চাঁদের আলোয়
আতুর ঘর প্লাবন করিয়ে দিতে পারত অনায়াসে।
গল্পের চক্রধর সাপটিকে আমার মাথার সামনে দু'মিনিট
দাঁড় করিয়ে মাথা নিচু করে বের ও করে দিতে পারত ঘরের বাইরে।
মা ঠিক জানত কোথায় এসে থেমে গেলে সাপের ছোবলেও ঝরবে মুক্তো
আর কোন গল্পে রূপকথার মশলা ক'চামচ ঢাললে খোকা পড়বে ঘুমিয়ে ।


মা সব সময়ই চেপে যেত দশ মাস দশ দিন ধরে
আমায় বয়ে বেড়ানোর গল্প,
রক্তে ভিজে যাওয়া আঁতুর ঘরের গল্প ,
নাড়ীর ভেতরের প্রচণ্ড যন্ত্রণার গল্প ,
প্রসব কালীন সময়ে যমে-মানুষের টানাটানির গল্প।


হয়ত তাই , নিজের যন্ত্রনা না জানানোর কার্পণ্যে
মা আমার ছোট্ট মুখ টাকে
প্রাধান্য দিতে পারত চাঁদের তুলনায়।
কারণ , সে যে আমার মা।