বৈশাখের শেষ প্রহরে
মধুমাস এলো এলো প্রায়
সেই সন্ধিক্ষণে,
প্রখর সূর্যতাপ ও উষ্ণ দখিনা বাতাসের স্পর্শে
এক আলো ঝলমল দিনে
তুমি এলে বাংলার স্বারস্বতঃ
সমাজের হে বরপুত্র,
তোমার মুখের ভাষায় জন্ম হ’লো ছন্দের
তোমার বীনার তারে
উদ্ভাসিত হ’লো সুরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি
পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ
সর্বত্র আলোকিত হ’লো
তোমার মনীষার করস্পর্শে  ।
তুমি এলে বলে কত শতাব্দীর
ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠল প্রাচীন জনপদ–
উজ্জয়িনী, হস্তিনাপুর, রেবা শিপ্রা নদীতট
মহাভারতের বানী বাহকেরা
আবার নতুন সত্ত্বায় উদ্ভাসিত হ’লো ।
মেঘদূতের কবি মন্দাক্রান্তা ছন্দে আবার জ্যোতিষ্মান হ’লো
উনবিংশ শতকের কাব্যভুবনে ।
তোমার একার ভিতরে রূপ পেল
প্রাচীন ভারতের সেই বিস্মৃত প্রায়
মুনি- ঋষিদের প্রজ্ঞা,
স্বর্গ হ’তে নেমে এলো আবার
উর্বসী, মেনকা সুরসুন্দরীরা
হে ঋষি, আজকের নিদাঘের উষ্ণ প্রহরে,
তোমার জন্মদিনে
আবার তোমাকে স্মরণ করি ।
হে বাঙ্গালী, বাংলা ভাষার
শ্রেষ্ঠ রূপকার, সিদ্ধ পুরুষ
তোমার চৈতন্যের আলো
আজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র,
নতুন বৈশাখ এলেই তুমি আবার
উদ্ভাসিত হও আপন মহিমায়,
আমরা একালের ক্ষুদ্র কবিরা
বিপুল বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি
তোমার জ্যোতি বিচ্ছুরিত আননের দিকে ।
হে ঋষি, তুমি ধন্য, বাংলা কাব্য জগতের
অবিস্মরনীয় অধিপতি
তোমাকে প্রণতি জানাই ।