আলো ঝলমলে সকাল, পাখির কলরব মেশে যানবাহনের হর্নের সাথে।
দূরের সবুজ ক্ষেত যেন হাতছানি দেয়, অথচ পথগুলো সিমেন্টের কঠিন আলিঙ্গনে বাঁধা।
কৃষকের কাস্তে আর লাঙলের স্মৃতি, আজ সেখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বহুতল, কাঁচের শরীর।

শিশুদের কলকাকলি, আগে শোনা যেত মেঠোপথের ধারে,
এখন তারা বন্দি ফ্ল্যাটের বারান্দায়, আকাশ দেখে ফ্রেমে বাঁধানো ছবির মতো।
গরুর পালের ধুলো ওড়া পথ, আজ সেখানে ছুটে চলে ঝাঁকে ঝাঁকে দ্রুতগতির গাড়ি।
হাট বসে আজও, তবে দর কষাকষির সেই চেনা সুর যেন কিছুটা ফিকে।

মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে বাঁধা পড়েছে কেনাবেচার হিসাব,
সম্পর্কের উষ্ণতাও যেন কেমন ডিজিটাল হয়ে গেছে আজকাল।
সন্ধ্যা নামে, ক্লান্ত শরীরে ফেরে মানুষ, গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে গ্রামে।
পেটের দায়ে ছুটে চলা, স্বপ্ন বোনা চোখে, ভবিষ্যতের আশায়।

আলো ঝলমলে দোকান, হরেক পণ্যের সম্ভার, তবুও কোথায় যেন এক নীরব হাহাকার।
এই গ্রাম শহর, যেখানে আধুনিকতা তার সর্বগ্রাসী হাত বাড়িয়েছে,
কেড়ে নিয়েছে কিছু স্নিগ্ধতা, কিছু সরলতা।
তবুও বেঁচে আছে কোথাও, কোনো কোণে, পুরনো দিনের ঘ্রাণ,
মাটির সোঁদা গন্ধ, আর একমুঠো শান্ত বাতাস।
এই ব্যস্ততা, এই ছুটে চলা, হয়তো জীবনেরই অন্য নাম।
গ্রামের শান্তি মিশেছে শহরের গতিতে, এক নতুন পরিচয় তৈরি হয়েছে।
তবুও মন কাঁদে সেই ফেলে আসা দিনের জন্য,
যেখানে সময় ছিল ধীর, আর জীবন ছিল সবুজ আর সরলতায় ভরা।