কাশফুল এবং তুমি


প্রথম দেখা হয়েছিলো কাশবনে
সেই ছিলো প্রথম প্রনয়, প্রথম শিহরণ।
ঘন নিকুঞ্জের মতো থুবড়ে পড়া কাশবন
তাঁর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শরতের স্নিগ্ধ বাতাস
অপরূপ দোল খাওয়া কুমারী সমীর।
কাশবনের প্রতি আমার এতটা প্রীতি গড়ে উঠেছিলো
ঠিক মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মতো,
নিয়তই আমাকে  আকর্ষণ করতে করতে
কখন যে তোমার কাছে নিয়ে আসতো
আমি তা নিজেও বুঝিনি।
তোমার সাথে দেখা হলো
তারপর প্রতিনিয়তই।
তোমার সর্বাঙ্গে জড়িয়ে থাকতো
স্বেত শুভ্র কাশফুলের বিমোহিত রূপ।
মনে হলো পৃথিবীর সমস্ত কাশবন
যদি প্যারাডাইস হতো?
সমস্ত কাশফুল সজ্জিত হতো তোমার কুন্তলে?
যদি এমন হতো, তুমিই কাশফুল
পৃথিবীর সব কাশফুল তোমারই মতো!
স্বেত শুভ্র নরম রেশমীয়
কাশময় তোমার শরীর।
একবার আমি তোমাকেই কাশফুল ভেবে
ছিঁড়ে নিতে চেয়েছিলাম
ধবল বসন থেকে শুভ্রতম তোমার উইংস।
তুমি ঠা ঠা রোদ্দুরের মতো ঝলসে উঠলে
আমাকে দিলে লজ্জাবতীর বিনত প্রকাশ।
আমি যতই বলতে চেয়েছিলাম, শোনো;
তুমি ততবারই ঐরাবতের মতো উত্তোলিত করলে
তোমার স্বরূপ। 
মেয়েরা এমনই হয়
যতটা রাগী, ততটাই মায়াবতী মন।
হঠাৎ তুমি একদিন আমাকে কাশফুল ছিঁড়ে দিতে বললে,
গাঁটবাঁধা কাশবন,
আমি তোমার আপদমস্তক কেশ কুন্তল ভরে দিলাম
কাশফুলের দীঘল বসনে।
তারপর একদিন বললে, তুমিই আমার কাশফুল
এই পুরো কাশবন যদি তুমিই হতে?
বললে, টাকা হলে তুমি একদিন কাশবন কিনে নিও
সেখানে থাকবে তোমার আমার 
ছনের ছাউনী ঘর,
চিরায়ত শিল্পায়ন, গ্রেভ অব সয়েল প্যালেস।
অবশেষে হলোও তাই
তুমি এখন প্রতিদিন কাশপেড়ে শাড়ি পরো
শাড়ির পুরো খলায় জুড়ে কাশফুল।
কাশবনে আমার ঘর
তুমি প্রতিদিন মাটির ঢিবির উপর অশ্রুসজল
কাশফুল বুনে চলো।
তোমার চতুর্পাশে এখন শুধু খেলা করে
রোদে পোড়া চৈত্রের বন
কিছু ভ্রমর আর নষ্ট প্রহর
ভ্রমরগুলো এখন শুধু তোমাকেই
অহেতুক কাশফুল মনে করে।