*         ##জয়শ্রী কর##
                হারানো দিন


হারানো দিন আসবে না তো ফিরে
সেসব ছবি পড়ছে মনে এখন ধীরে ধীরে।


প্রভাত রবি যখন পুবাকাশে
মায়ের ডাকে উঠে দেখি উঠোন আলোয় ভাসে।


স্কুলে যেতাম দাদার হাতটি ধরে
পড়ার পরে কাটতো সময় নানান কর্ম  করে।


রিনিঝিনি বাজত হতের চুড়ি
সকালবেলা মালা গাঁথা জবা-যূথীর কুঁড়ি।


পাখির ছানা ভিজত গাছের ডালে
বই বগলে মাথায় চাটা মজা বর্ষাকালে।


বাজার করে ফিরলে বাবা বাড়ি
পোষা মেনি মাছের গন্ধে ছুটত তাড়াতাড়ি।

যাত্রা দেখার ছিল ভীষণ নেশা
খামির আঁচল ধরে যেতাম নিষেধ মেলামেশা।


সবার সাথে রাত্রে স্কুলে থাকা
হ্যারিকেনের দম কমিয়ে মাথার কাছে রাখা।


বিদ্যালয়টি রেললাইনের পাশে
ট্রেনে করে রোজ যাতায়াত কেউ বা যেত বাসে।


মায়ের তৈরি নাড়ু কাচের জারে
পাঁচালি পাঠ করতে হতো বৃহস্পতিবারে।


জ্বলত ঘরে কেরোসিনের আলো
কুপির আলোয়  দেওয়াল জুড়ে পড়ত  ছায়া  কালো।


আম কুড়াতে  যেতাম ছুটে ভোরে
মা বলতো, যাসনে একা ভূত-পেত্নী ঘোরে।

বাবার হুকুম নীচে নজর দিবি
খদ্দের এলে বলবি কথা কী চায় খবর নিবি।


ডাংগুলি আর বউ বসন্ত খেলা
কেরাম পেলে জমে যেত কাটতো সন্ধ্যাবেলা।


বেঁধে দিত মাসি চুলের ঝুঁটি
পিতল বাসন মাজতে পিসি বুলিয়ে চুলের লুটি।


পড়ায় ভীষণ কাঁচা, দিতাম ফাঁকি
কলম হাতে এখন আমি নানান ছবি আঁকি।