একে একে কাটল বছর, বয়স হলো আজ আশি
সেদিনের সেই তাগড়া জোয়ান সবার কাছে বাসি।
অতীতের সেই দিনগুলো আজ তুলছে স্মৃতির ঝড়
বুকের সাহস যাচ্ছে কমে করছি লাঠিতে ভর।
আচমকা দুই ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি ফোটে
বোধহয় কিছু সুখের স্মৃতি মনের কোনে জোটে।
বুকের ভেতর চিনচিন করে সেদিনের করা ভুল
ক্ষণে ক্ষণে তা অশ্রু হয়ে ভাঙ্গে দু’পাড়ের কুল।
একে অন্যের লালনে পালিত গোটা ঘর সংসার
প্রিয়জনের আজ মুখোমুখি হই বছরে দু’একবার।
সন্তানেরা থাকেনা কাছে, থাকে দূর কোনো দেশে
শেষ দেখাটা হবে কিনা আর? দম যায় আর আসে।
মেয়েরা আমার ব্যস্ত ভীষণ স্বামী সন্তান নিয়ে
আসে যদি তারা একটুখানি ফিরে যায় পর ক্ষণে।
নাতি-নাতনীরা অতি আধুনিক আসেনা ধারে কাছে
ভার্চুয়ালি ব্যস্ত সবাই নীরব আনন্দের খোঁজে।
অতি আপন স্ত্রীটাও ফাঁকি দিয়েছে সবার আগে
ঘাটের মরা মরেও মরিনা জীবন চলে আজ ভাগে।
সম বয়সের অনেকেই নেই এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে
যারা আছে তারা বিছানায় শুয়ে শূন্যে দু’চোখ পেতে।
আজ শরীরের চামড়া গুলো ঝুলে আছে শুধু হাড়ে
জমদূত এসে ধরে কখনো আবার কখনো ছাড়ে।
কমে গেছে মোর শ্রবন শক্তি শুনিনা কথা কানে
জিজ্ঞাসিতে ভয় পাই আজ, তবু কি মনটা মানে?  
দুই চোখে আর দেখিনা ভালো, হাতড়িয়ে চলি ফিরি
জীবনের যতো অর্জিত ধন, সবকিছু যাব ছাড়ি।  
সকলের চাওয়া হয়েছে পূরণ, আমি বা পেলাম কি?
কতটুকু নিয়েছি নিজের জন্য, বিধাতাকে দেব কি ?
জীবন প্রদ্বীপ নিভু নিভু আজ জ্বলছে মরণ খেলায়
ধরছে বাজি সে ঝড় তুফানে শেষ বিদায়ের বেলায়।