এই রজনীতে মনে পড়ে যায়
সেই রজনীর কথা,
স্বপ্ন জগতে আমরা দুজনে
জ্বালাতাম প্রেম শিখা ।
মুঠোফোনে মোরা বলতাম কথা
সারারাত ধরে জেগে ,
তোমার কণ্ঠে অপার খুশিতে
ভরে যেতো মন রাতে ।
সারাদিন যেতো বুকে নিয়ে সেই
ছবিটা আগলে রেখে ,
পাখির মতোই যেতাম যে ছুটে
গোধূলিবেলার ডাকে ।
আকাশ-বাতির আলোয় আলোয়
হারিয়ে যেতাম মোরা ,
সুখের গল্প দুখের গল্প
ভাগাভাগি হতো জোড়া ।
রঙিন চশমা চোখে-মুখে দিয়ে
দেখতাম কত স্বপ্ন ,
মনে হতো যেন সেরা উপহার
বিধির দেওয়া সে রত্ন ।
এখন রত্ন ঘুমিয়ে পড়েছে
অন্যের কোলে মাথা ,
আমার আমিকে ভাবিয়ে তুলছে
পড়ছে শিশিরকণা ।
মন-প্রাণ খুলে ভালোবাসি যারে
ভালোবাসা আমরণ ,
বধূ হয়ে সে যে করে বিচরণ
রাখতে পারি নি ধন।
মাথার ভেতর মৌমাছির মতো
ভনভন করে যেন ,
হাজার দিবস ব্যথার অনলে
জ্বলে মন ঘন ঘন।
জ্বলে পুড়ে আমি হয়েছি যে ছাই
লৌহ-মানুষ নয় ,
নব নব রূপে জন্ম নিয়েছি
তবুও অগ্নি বয় ।
কাকের অবেলা ডাকের মতোই
বেদনার ডাক শুনি ,
বক্ষের ঠিক মাঝখান থেকে
হু হু করে উঠে মণি ।
অনেকে বলেছে ভুলে যাও তারে
কতজন যাবে কতজন ফের আসে ,
আমি তো জেনেছি  জন্মের মতো
জন্মায় প্রেম নরম বক্ষে বসে ।
শীতের কুয়াশা ভেতরের রূপ
আবছা হয়েছে সব ,
শুকনো পাতার মতো মড়মড়
করে গুঁড়ি হয় সাধারণ কলরব ।
একটি গ্রহেতে আঘাত হানছে
মহাবিশ্বের তাণ্ডবলীলা এসে ,
বিজন নিশিতে ব্যথার ছোবলে
মরে যাই ভালোবেসে ।
ঘাসফুল হয়ে মনের জমিনে
ফুটছে সে তিলে তিলে,
যতদিন যাবে ততদিন তার
অনন্ত ছবি থাকবে হৃদয়-তলে ।
তুমি তো চন্দ্র; ময়ূখের অসি
নিরালা সদনে গৃহের জানালা দিয়ে ,
আমি আকাশের পানে চেয়ে রই
ভেজা ভেজা চোখে গণ্ড ভিজিয়ে নিয়ে ।
এখন হয়তো কাটাচ্ছে দিন
আমার পায়রা সুখে ,
প্রতিরাতে নিই অমিয় গরল
গোপন ব্যথার শোকে।