চৈত্রের দাবদাহে, ছাতি ফাটা প্রখর রোদ্দুরে,
কর্মক্লান্ত হয়ে যখন ফিরি, ঘর্মাক্ত কলেবরে;
কে তুমি? বস মোর পাশে, নিয়ে ঠাণ্ডা জল?
তাল পাতার পাখার বাতাসে, দেহ কর শীতল?
তব স্নেহের ছোঁয়া, দুর করে দেয় সব কর্মক্লান্তি;
নিমিষেই হৃদয় উঠে ভরে, নিয়ে গভীর প্রশান্তি।
হে মোর তৃষ্ণার জল; বসন্তের মৃদুমন্দ সমীরণ;
তুমি আমার দয়িতা; আমরা দু'জনে এক জন।


রোগে-শোকে তুমি দাও সেবা, দিবারাত্রি ভুলে,
মাতৃসম ক্ষুধার অন্ন, মুখে দাওগো তুমি তুলে।
মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে, তুমি আমার কম্বল;
ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত তিমির রাতে; তুমি একমাত্র সম্বল।
তুমি আমার বন্ধু, সহযোদ্ধা, পথ চলার সাথী।
জীবন মোরা করি পার, জ্বালিয়ে প্রেমের বাতি।
মম পিতৃত্বের স্বাদ করেছ পূরণ; দিয়েছ সন্তান;
তুমি আমার দয়িতা; আমরা দু'জনে এক জন।


তুমি ভগিনী হয়ে করছ খুনসুটি, দিবস-রজনী;
সহধর্মিণী হয়ে পালন করছ সংসার-ধর্ম, হে গুণী।
অভিমানী তুমি! দু'চোখ ভর জলে, হলে অভিমান;
রাধুনী তুমি! রান্না করে খেতে দাও, নানা ব্যঞ্জন।
সেবিকা হয়ে কর সেবা, পুরো পরিবার পরিজন;
তুমি অনন্যা! তুমি ছাড়া হয়না কোন আয়োজন।
স্ত্রী, মাতা, বন্ধু, সেবিকা তুমি! এক অঙ্গে বহু জন;
তুমি আমার দয়িতা; আমরা দু'জনে এক জন।


জীবনের বেশীটা সময় মোরা একসাথে করি পার;
নিয়ে স্মৃতি সুখ-দুখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার।
যৌবনের প্রারম্ভে যার শুরু; মৃত্যুতে তার অবসান;
ছেলে-মেয়ে চলে যায় দুরে, থাকি মোরা দু'জন।
যৌবনের দিনগুলো কাটে, রোমাঞ্চ-বিনোদনে;
শেষ বয়সটা কাটে ঝগড়া, আর স্মৃতি রোমান্থনে।
সব শেষে, নিষ্ঠুর মৃত্যু দু'জনেরে করে বিভাজন;
তুমি আমার দয়িতা; আমরা দু'জনে এক জন।
                 ১০.০৮.২২ ইং
        -----------:::::::::::-----------