আমরা জানি যে ছন্দের প্রতিটি মাত্রা চার করে সীমাবদ্ধ থাকে তাকে স্বরবৃত্ত ছন্দ বলে।
উদাহরণ,
তুই কি আমার/ দুঃখ হবি?/
এই আমি এক/ উড়নচণ্ডী/ আউলা বাউল/
রুখো চুলে/ পথের ধুলো/
চোখের নীচে/ কালো ছায়া।/
সেইখানে তুই/ রাত বিরেতে/ স্পর্শ দিবি।/
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
তুই কি আমার/ শুষ্ক চোখে /অশ্রু হবি?/
মধ্যরাতে/ বেজে ওঠা /টেলিফোনের/ ধ্বনি হবি?/
তুই কি আমার/ খাঁ খাঁ দুপুর/
নির্জনতা/ ভেঙে দিয়ে/
ডাকপিয়নের/ নিষ্ঠ হাতে/
ক্রমাগত /নড়তে থাকা/ দরজাময়/ কড়া হবি?/
একটি নীলাভ/ এনভেলাপে /পুড়ে রাখা/
কেমন যেন /বিষাদ হবি?/
কবিতা আনিসুল হক
তোমার কাছে/ জলের কলস /তোমার কাছে /ঢেউ,
তবু কেমন /তৃষ্ণা কাতর/আমার কি নেই /কেউ
তুমি আমার /এমন স্বজন/কাছে থেকেও /দূরে
অথচ-মোম/গলছ তুমি/আগুন হয়ে/ও
নিঃসঙ্গতার/যাচ্ছি একাই/ পুড়ে
কবি নাসির আহমেদ
এখানে প্রতিটি লাইন চার মাত্রার ব্যারিকেডে স্বরবৃত্ত ছন্দ উল্লেখ হয়েছে ইহা উপরিক্ত স্বরবৃত্ত ছন্দ মাত্রা ।
চার হলে পূর্ণ মাত্রা ধরা হয়, তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন মাত্রা চার মাত্রায় পূর্ণতা পায় সেটা বুঝাতে চেয়েছি..
ব্যতিক্রম হলো
পর পর তিনটি বদ্বাক্ষর থাকে সেখানে প্রতিটি এক মাত্রা হওয়ার কথা কিন্তু সেখানে কবিতার ছন্দের চার মাত্রা পূর্ণ মাত্রা হয়। সুন্দর দিন কে ভাঙি যখন.. সুন/দর/ দিন/, এইভাবে দেনদরবার,তালগাছটার, জানলাম যে
স্বরবৃত্ত পর পর তিনটি মাত্রা থাকার কারণে ইহা পূর্ণ মাত্রায়. অর্জন করেছে ।
দ্বিতীয় ব্যতিক্রম নিয়ম যদি পর পর দুটি বদ্ধাক্ষর হয় শেষে এক মাত্রা থাকে তখনও পূর্ণমাত্রা ইহা স্বরবৃত্ত ছন্দ ।উদারহণ কবিতা সহ,,
বইচোরা কী /কাব্য রসিক /ছন্দ জানে?
বই অনেকের /বাতিক ঘরে/সাজিয়ে রাখে
নাকি তেমন/ হদ্দনবিশ/ চোরের ঘরে/
ধুলোয় মলিন/ বুকশেলফে/
কেমন আছ?/
এখানে বুকশেলফে ভাঙলে পাই ..বুক/শেল/ফে।
এক মাত্রা এক মাত্রা শেষে এক মোট হওয়ার কথা তিন এখানে ব্যত্ক্রিম হলো স্বরবৃত্ত ছন্দ পূর্ণ চার মাত্রা। বুক ১ মাত্রা শেল১ মাত্রা ফে ১মাত্রা স্বরবৃত্ত বিচারে কিন্তু সেই হিসেব করলে তিন মাত্রা কিন্তু ব্যতিক্রম হলো চার মাত্রা এখানে
আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
এরপর ব্যতিক্রম নিয়ম হলো
দাঁড়িয়ে ,বাড়িয়ে ,জানিয়ে,হারিয়ে, জড়িয়ে,বাজিয়ে এই ধরণের সব এখানে স্বরবৃত্ত ছন্দে তিন মাত্রা ধরে কবিতা মিলাতে পারেন অথবা দুই মাত্রা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ।
উদাহরণ.. আমি তোমার /নীলাম্বরী /শাড়ির দুপাড়/
বক্ষ ঘিরে /জড়িয়ে থাকি/লুটোই পায়ে/
কবিতা আল মাহমুদ
ব্যতিক্রম আরো রয়েছে একটি উদাহরণ দিয়ে শেষ করতে চাই
স্বরবৃত্ত কবিতার যখন মাত্রা ব্যবহার করি, ছন্দ ও বা ই থাকলে তাকে শূন্য মাত্রা হিসেবে ধরে নিতে পারেন অথবা মাত্রা পূর্ণ করার জন্য একমাত্রা ধরে নেওয়া যায় অনেকে খ্যাতিমান কবি ব্যবহার করেছেন।
শেষ বলি
ছন্দ কাকে বলে,, ছন্দ হচ্ছে কবিতার ব্যকারণে কবিতার অলংকার কবিতার নিয়ম ,যেখানে কবিতাকে কবিতা হিসেবে তুলে ধরা হয়
আমরা যারা খাই এর সাথে দাই মিলালে ছন্দ বলি এটা ছন্দ না এটা অন্তমিল আর ছন্দ হচ্ছে তিন প্রকার স্বরবৃত্ত ,মাত্রাবৃত্ত,অক্ষরবৃত্ত।
মাত্রা কাকে বলে
মাত্রা হলো কবিতার আন্ডার লাইনে কবিতার নিদিষ্ট থামার স্থান বিন্দু মাত্রা হলো শ্বাস নেওয়ার নিদিষ্ট স্থান
কবি জসীম উদ্দীন
কবর কবিতা মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত যেমন
এইখানে তোর /দাদির কবর/ডালিম গাছের /তলে,
তিরিশ বছর /ভিজিয়ে রেখেছি /দুই নয়নের /জলে।
এই খানে তোর/৬ মাত্রা দাদির কবর/৬মাত্রা ডালিম গাছের/৬ মাত্র তলে /দু মাত্রা
তিরিশ বছর/৬মাত্রা/ ভিজিয়ে রেখেছি/৬মাত্রা দুই নয়নের /৬ মাত্রা জলে দু মাত্রা
এইভাবে সবটুকু কবিতা এইভাবে রচিত
আশা করি বুঝতে পারছেন
বিস্তারিত পড়তে একটি বই কিনে পড়ৃন অনলাইনে ছন্দ বিষয়ক বই পাওয়াা যায়,,রকমারি তে অনেক বই পাওয়া যায়
এছাড়া প্রকাশনী থেকে কিনে পড়তে পারেন
মুসার লেখা