সহসা সে হারাইয়া গেলো তিমির এ অন্ধকারে,
জানি কোনদিন দেখিব না তারে আসিবে না আর ফিরে!
যে গেছে চলে সকলি ফেলে তারি ভাবি সারাদিন
তারি তরে আজ কাঁদিছে হৃদয় মুখ মোর মলিন।
একদিন তারে পেয়েছিনু আমি সহসা এক সাঁঝে,
ভাবি নাই সে এমন করিয়া মিশিবে মোর মাঝে
অনেক কথাই বলিল ও সে শুনাইয়া ছিল গান
প্রথম দেখাই অবাক এ আমি জুড়াইয়া ছিল প্রাণ।
তারপর আমি ভাবিতাম শুধু কেমন করিয়া ও,সে
ক্ষণিকের-ও তরে মানুষের সাথে এমন করিয়া মেশে!
আরও ভাবিতাম আর কোনদিন দেখিব কি তারে?
একথা ভাবিয়া সান্ত্বনা পাই হলেও হইতে পারে।
এমন করিয়া কত স্মৃতি আছে জীবনের সাথে মিশে,
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।


একদা সেদিন ক্ষণিকের তরে ডাকিল হটাত করে,
বলিল আমাই দেখিবে ও সে মিলিবে আমার তরে।
পুলকিত স্বরে বলিলাম আমি আসিবো কোথায় কবে?
যেথা আসি আমি তোমারো সহিত মোর দেখা তব হবে।
মিলিলাম আমি দেখিলাম তারে বলিল অনেক কথা,
তার কথা শুনে কাটিল আমার পুরনো দিনের ব্যথা ।
এরপর, থেকে কতশত দিন মিলেছি তাহার সাথে
কত সহজেই দিন কেটে যেত ভাবিতাম আমি রাতে।
তারপর,এই শূন্য জীবনে ছিল স্বাদ মোর যত,
যাহা চেয়েছি পূর্ণ হয়েছে তারি দ্বারা শত শত।
কত বিরহের,কত আনন্দের কথা বলিত মোরে
কখনো ভাবিনি এমন করিয়া চলে যাবে বহুদূরে!
সেদিন থেকে গিয়েছি যেখানে পেয়েছি তাহার দেখা,
গল্পের ছলে ছিল সে আবেগী নিরালা তে একা একা।
বুঝিনি কখনও এমনি করিয়া বিরহের মাঝে ফেলে
বক্ষ হৃদয়ে ব্যথিত করিয়ে বহুদূর যাবে চলে।


শত অভাবে শত পিড়নায় মুখে তব ছিল হাসি
হাসির আড়ালে অন্তরে তব হতো না কভু সে উদাসী;
বাড়িতে তাহার ছোট ভাইটির কথা ভাবিত ক্ষণে
আরো ভাবিত আর কত কথা একা বসে অকারণে।
ঈদ এলে তব খুশিতে তাহার বুকে বাধিত আসা
বাড়ি গিয়ে সেই সকলের তরে ভাগাভাগি ভালবাসা।
নিজ গায়ে ঐ মেঠো পথ ধরে যেত সে গায়ের পানে
বাড়ি গিয়ে কত ছুটাছুটি,আর মাতামাতি শত গানে!
হাসিখুসি শেষে ফিরবার কালে ফিরে ফিরে তব চায়
হাসিমুখে রেখে আসে সে ফিরে,লয়ে সকলের বিদায়;
আজি সে কোথা হারা হয়ে গেছে,যে হাসি ছিল মুখে
সারা দুনিয়ার যত ভাসা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!


এখানে আসিয়া ছুটাছুটি তার থামিত না এক লেশ,
শত ছুটাছুটি মাঝে বলিত ও সে আছি তব আমি বেশ;
দিনের শেষে অন্তিম ক্ষণে আসিত ঝিলের ধারে
ফাগুনি হাওয়ায় সুরের আভাস দিত সে উজার করে।
তার গান শুনে সকলি তারে বাসিত অনেক ভালো
সকলের তরে জোনাকির মত ছাড়াইয়া দিত আলো!
সেই আলো আজ কোথা জানি হায় হারাইয়া গিয়াছে মিশে
ছোট-খাট সেই হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।


একদিন এক রুক্ষ দুপুরে জানাইল সে এ বলে,
তাহার শরীর কি যেন হয়েছে আর নাহি আর চলে!
আমি বলিলাম কিছুদিন কি থাকিব তোর সাথে
থাকিল না সে চলিয়া গেলো নিজ বাড়ি মেঠো পথে।
তার কিছুদিন যেতে না যেতে আমারে জানালো পরে,
আর কিছুদিন তারপর সে আসিবে আবার ফিরে।
পথ পানে সেই চেয়ে আছি আমি আসিবে ও,সে কবে
আসলে আবার তার সাথে সেই পুরনো আলাপ হবে।


এইভাবে দিন কাটিতেছিল এক সহসা সন্ধ্যা-তে
তাহার মৃত্যুর খবর আসিয়া আমার কানে তে বিঁধে!!
নির্বাক হল শত কথা মোর স্তব্ধ মনে বলি
কেমন করিয়া সকলে ফেলিয়া গেলে তুমি ওগো চলি?
নিজ হাতে তারে কবর দিয়েছি আঁখি তে অশ্রু ঝরে!
বুকভরা ছিল তীব্র বেদনা বুঝতে পারিনি তরে।
হাত জোড় করি দোয়া মাঙ করি আয় খোদা দয়াময়,
আমার বন্ধুর তরে যেন বেহেস্ত নসিব হয়।
সাগর হারিয়ে ফুটেছে আজি এ বসন্তে,
পুরনো ব্যথা ভুলি না ভুলি নতুন ব্যথা এসে বিঁধে।।


রচনাকালঃ- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮


বিঃ- দ্রঃ- প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু ব্যথায় তার স্মৃতিচারণে লিখা এ কবিতা
(বিদায় ২৫ অক্টোবর ২০১৭)