হাজার মাইল ঘুরে, শতাব্দীর সব ক্লান্তি মেখে,
পৃথিবীর পথে পথে চেয়ে দেখেছি—
কত জানা-অজানা সৌন্দর্য উপভোগ করেছি,
তবুও কোনো নৈসর্গিক দৃশ্যই মন ভোলাতে পারেনি।

ক্লান্ত হৃদয় নিয়ে, মায়ের আঁচলে ফিরে—
আমার গ্রাম বাংলার বালিকণা মেখে দেখি,
এই তো ক্লান্তি দূর করার পরশপাথর!
আমার গ্রামের প্রতিটি উপাদান যেন আপন,
যেন হৃদয়ের গহীনে জমে থাকা সব দুঃখ চুষে নেয়।

শত মাইল দীর্ঘ রঙিন ফুলের বাগান,
বিদেশি তিনশো প্রজাতির গোলাপও,
তবু আমার মন ভোলেনি!
গ্রামের রাস্তার পাশে অবহেলায় বেড়ে ওঠা বাট ফুল,
শৈশবে রাস্তার ধারে মধু চাখার সেই স্মৃতি—
এত আপন, এতই কাছের!

ধূ ধূ নিস্তব্ধ বিস্তির্ণ মাঠে,
বসন্ত উৎসবে মেতে উঠা সূর্যমুখী খুব টানে।
বাড়ির পাশের ওই উঁচু গাছের ডালে,
হলুদ পায়ের বাসা বাঁধা পাখি_
আমার খুব আপন কেউ, যার সৌন্দর্যে আমি অভিভূত।

বারবার ফিরে যেতে চাই,
জীবনানন্দ দাশের মতো বলতে চাই—
"আবার আসিব ফিরে..."
এই চির শান্তির মম গ্রাম, আমার নীড়ে।
আমারও ইচ্ছে করে—
জীবন না থাকলেও বেঁচে থাকি মানুষের মনে,
গ্রামের ধুলোকণা হয়ে, বাতাসে মিশে।

আমার গ্রাম, আমার প্রাণ,
প্রতিটি বিন্দু বালুকণা—
এ যেন প্রেয়সীর হাতের ছোঁয়া।
বাতাসে উড়ে বেড়ানো গন্ধ_
প্রিয়তমার অমৃত সুধা।
সব মিলিয়ে যেন এক "বনলতা সেন"—
আমারই শেকড়, আমারই চির আপন!