তুমি কবি - বনের পাখির মত সারা দিনমান
মনের আনন্দে তুমি গেয়ে যাও
চিরসুন্দরের স্তবগান ।
তোমার ছন্দের নিপুন দোলায়
দুলে উঠে হৃদয়ের সপ্ত পারাবার;
তোমার ঝংকারে কেঁপে উঠে ধরণীর বুক -
ভেঙে যায় অন্যায়ের বাঁধ,
প্রতিবাদী ভাষা খুঁজে পায়
নিপীড়িত মানুষের দল ।


তুমি কখনো সত্যের অবমাননা সইতে পারো না;
তোমার বিশ্বাস - যা সত্য তাই সুন্দর ।
তাই কলম নামক সত্যের মশাল হাতে
তমসার বুকে নবসূর্যের মত
তুমি বার বার আবির্ভুত হও...


দুঃস্মৃতির নদীতীরে সোনার ফসল
সোনার তরীতে তুলে দিয়ে তুমি বলেছিলে-
'ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে তরী-
আমার সোনার ধানে গিয়েছে ভরি ।'
ক্রন্দিত জাতির মুখপানে চেয়ে তুমি বলেছিলে -
জাহান্নামের আগুনে বসিয়া আমি হাসি পুষ্পের হাসি ।
বিবর্ণ জীবনে রঙিন ছোঁয়ায় তোমার কণ্ঠে বেজে উঠল,
....... চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটরের বনলতা সেন ।
জীর্ণ পৃথিবীতে আবর্জনার স্তূপ দেখে
তোমার কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল-
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি ।


সত্তর বছর কেটে গেল - তোমার দেখা আর পাই নি ।
এতকাল ধরে তুমি কি ঘুমোচ্ছো?
না, না এই জীর্ণশীর্ণ পৃথিবীতে
তুমি ঘুমিয়ে থাকতে পার না ;
সত্যের মশাল হাতে তুমি জেগে ওঠ -
ওই দেখ , দু'হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে মহাকাল ।