অরণী, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ?
দেখ কত সুন্দর রাত্রি,
দূর আকাশের মিটমিটি তারাগুলো
তোমায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে ।
সারাদিনের ব্যস্ত পৃথিবীটা
যেন ঐ শান্ত আকাশের বুকে
মাথা রেখে ঘুমিয়েছে, তোমার মত,
আর তারাগুলো যেন তাকে
প্রাণ ভরে দেখছে, ঠিক আমার মত।
কি স্নিগ্ধ তার রুপ, কি মায়াময়,
তাকে ছোঁয়ার আশায় কত জোনাকি
ঘুম ছেড়ে বেড়িয়েছে দেখ।
হাস্নাহেনা গাছটা থেকে
এক অদ্ভুত সুন্দর সুবাস এসে
বাতাসটাকে চঞ্চল করে দিচ্ছে,
যেন আনন্দে সে বাতাস পাড়ার
দুষ্টু ছেলেটার মত একটু অস্থির।
কাছেই কোথাও একটা ঝিঝি পোকা
অবিরাম ডেকে যাচ্ছে,
যেন তোমার ঘুম ভাঙাবার নিরন্তর
চেষ্টা চালাচ্ছে, দুটো গল্প করবে বলে।
অসময়ের বৃষ্টি ভেজা মাটির গন্ধ
ভেসে আসছে নাকে,
ভাঙাচোরা ঘরখানা আলো করে
তুমি ঘুমিয়ে আছ,
আর রাত জাগা তারার মত মুগ্ধ হয়ে
আমি তাকিয়ে আছি, তোমাকে দেখছি।
ইচ্ছে করছে যেন হাজার বছর
এমনি করে তাকিয়ে থাকি,
তুমি জানোনা তোমাকে কত ভালবাসি।
অসময়ের খাপছাড়া বৃষ্টিটাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
যে তোমাকে আর আমাকে এখানে এনেছে,
যে আমার সব কষ্ট ভুলে দুদন্ড তোমার মাঝে
বিভোর থাকার একটুখানি আবকাশ দিয়েছে।
আমি ডাকছি না, তুমি ঘুমিয়ে থাক,
আর আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি,
একগাছি এলোচুল তোমার ফর্সা মুখের
ওপর এসে ঊড়ছে; আর আমি হাত বাড়িয়ে
তা সরিয়ে দিচ্ছি; আর ভাবছি
আমার মনের ডাকে সাড়া দিয়ে তুমি
জেগে ঊঠবে, আমার সাথে
ঐ চাঁদ তারাদের সঙ্গি হবে,
আমার চাওয়া পুর্ণ হবে।
আমি জানি তুমি সে ডাক শুনতে পাও,
একাকি সময়ে যখনি তোমায় ভেবেছি
তখনি বেজে উঠেছে তোমার টেলিফোন,
উদাস দুপুরে যখন আলসে ঘুম এসে জড়িয়েছে
তোমার হাসিমাখা মুখখানা তখন
আমার কল্পনার রাজ্যে রঙ ছড়িয়েছে।
আমি জানি আজও তুমি আসবে,
আমার চাওয়া পুর্ণ হবে।