গোয়েন্দা


জানালা খানি হালকা ধাক্কা দিতে খুলে গেলো।ওমনি হাজির হলো আস্ত মহা শরীর নিয়ে। বুজলাম সে মহা ফর্সা।তাই বলে কি চক্ষু খানি চড়ক গাছ করে দিবে।
যায় চশমা টি খুঁজে নি।
বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে গেলো।কারো কোনো খবর নাই।চোখ পড়িল তারিখের পাতায় দেখি আজ শনিবার যাকে বলা হয় কাজের টান।বলতে তো হবে শুক্রবারে যে আরাম করে নরম হয়।
হালকা লঙ্কা গুঁড়ো মসলা ধুলো দিয়ে রান্না করে পেট শান্তি করা ছাড়া কি আর উপায় আছে?
রাস্তা খানি নরকের প্রহরী দিয়ে বালির সাঁতারে দাঁড়িয়ে আছি।একটি ও গাড়ি যেন খালি নেই। সবাই যেন বিয়ে করার তাড়া আছে যে মনে হয় রাস্তায় গাড়ি ফাঁকা নায়। অবশেষে পেলাম একখানা গাড়ি।
চলেন ভাই কুলুভনি গাঁয়ে।কি আশ্চর্য আপনি অতটুকু যাবেন না? আচ্ছা তাইলে বাস স্টেশনে পর্যন্ত দিয়ে আসেন।
চাচা বাস স্টেশনে আসলাম নামুন।ওহ এসে পড়লাম আচ্ছা নাও তোমার ভাড়া ২০ টাকা।চাচা বিশ টাকা দিলেন পঁচিশ টাকা দেন। আহারে এটি তোমাদের সমস্যা বিশ টাকার ভাড়া পঁচিশ টাকা চাও।তাই তো তোমরা সে অবস্থায় টানা পড়ে থাকো!


আসসালামুয়ালাইকুম চাচা , বাসের সময় কখন হবে।এই তো বিশ ত্রিশ খানিক হবে।
বসে পড়লাম বাসে ঘন্টা খানিক পথ অল্প সময় লাগবে। ও ভাই উঠেন বাস আর যাবে না আপনার গন্তব্যে গাড়ি থেমেছে। হালকা চোখ লেগে আসায় বুঝতে পারলাম না কখন কুলুভনি এসে পড়লাম।
নামতে দেখি কি আস্ত বড় কালো পর্দা মতো গিলে খেয়ে নিচ্ছে সকল কিছু।না জানি কখন আমাকেও ঘিরে খেয়ে না ফেলে।একটি রিকশা এখান দিয়ে যাতায়াত করে না।এটা আমার বিয়ের পর থেকে জানা আছে।এখান থেকে পাকা দুই ক্রোশ পথ পড়ে আমার গন্তব্য।বিকেল হলেও রিকশা পাইতাম এখন তো সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হতে লাগলো তাই রিকশা ভাইয়েরা নিজ চাদরে আশ্রয় নিয়েছে। দুই তিন মাঠ হাঁটতে হবে।রাত অনেক আঁধার যেন এই পথে মানুষের বাজার উঠেছে সন্ধ্যা আগে এখন যেন মনে ভুতের বাজার বসিলো।হালকা থমথমে ভেজা চুল থেকে হিমালয় উপর প্রচন্ড সূর্য তাপে গলে বরফ পানি গড়িয়ে পড়ে আমি এই মুহূর্তে সে গন্ডি তে রয়েছি।সে সময় দিক মনে রাখা মানে পরিক্ষা হলে প্রশ্ন না বুজি বার মতো। কিন্তু কোনো এক দিক থেকে হালকা মৃদু বাতাস আমাকে রাঙ্গিয়ে দিয়ে বার বার চলে যায়। সবকিছু তে ভৌতিক ভাবা ঠিক নয় এটি শীত মৌসুম আসিবে এটার আগাম খবর জানিয়ে যায়। অনেক পথ অতিক্রম করতে খরা মাঠে পায়ের তালুতে অন্য রকম জিনিসের অনুভব হলো এটা তো নিশ্চিত নিচে মাটির আবাস নেই।অল্প আলো রয়েছে চাঁদের তাকে সঙ্গি বানিয়ে নিচে দেখি একখানা কাপড়।হাতে নিয়ে ভালো করে দেখা যায় না কিন্তু বুঝতে পারি এটা এক পুরুষের কাপড় হবে। কিন্তু তার উপর স্বেচ্ছাসেতে তরল কি যেন লেগে রয়েছে আবার চিন্তা হতে মুক্ত হয়ে,আরে এত বড় মাঠ কাঁদা রয়েছে কোথাও হয়তোবা কারো কাপড় ভুলে রেখে গেছে।আমি ও আপন মনে পথ হাঁটতে লাগলাম।মুখে আলো এসে পড়েছে চক্ষু তে ঠোঁটের একদিকে মুচকি হাসি।দেখি হারিকেন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শশুর বাড়ির দরজা সামনে শাশুড়ি। মাথায় হাত বুলিয়ে বলে -বাবা কষ্ট হয়েছে আর রাতে করে আসলা কেন। তুমি বলেছ যে বিকেলে আসিবে তখন থেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছি। মনে মনে বলি এতক্ষণ এমনে দাঁড়িয়ে থাকে কে মেয়ের জামাই বলে। মেয়ের মন খুশি রাখতে আমার জন্য এতো চিন্তা।হাত মুখ ধুয়ে বসলাম বউকে ডাক দিয়েছি কহিলেশ কই তুমি।এই তো খাবার গুছিয়ে রেখেছি এসো তাড়াতাড়ি খেয়ে নিতে। এই কি দেখলাম আসমান পরিমাণ খাদ্য সাজিয়ে রেখেছে যেন বাদশা আয়োজন করেছে। মনে মনে বলি এতো খাবার এমনি দিয়েছে নাকি তার একটা মেয়ে রে আমি এত বছর গাদার মতো পরিশ্রম করে খাওয়া দাওয়া ইত্যাদি দিয়েছি।তা চিন্তা করে চোখের খাতিরে এতো আয়োজন।
গাঁয়ে সকাল মানে তো বাতাসে ভেসে আসে সকাল হয়েছে এই চিঠি নিয়ে।বউ আমি একটু বাজারে ঘুরতে চললাম।
বাজারের নিয়ম হচ্ছে প্রত্যেক দোকান ঘিরে দশ বারো জন করে থাকে।আজ দেখি কোনো এক স্থানে দোকান নেই কিন্তু সবাই গোল করে দাঁড়িয়ে কি যেন দেখছে।আমি ও কি দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি আমি ও নিজে গেলাম দেখিতে।হায় কি সর্বনাশ হয়েছে কি দেখিতেছি গলায় লম্বা সুরঙ্গ হয়েছে লাল বর্ণের ঝর্ণা জমে বরফের মতো জমাট বেঁধেছে।সবাই বলা বলি করে এই লাশ দেখে তো মনে হয় রাতের কোনো পিশাচ রুপে মানুষের কাজ।